Skip to content
Home » ইন্দুবালা ভাতের হোটেল PDF রিভিউ | কল্লোল লাহিড়ী | Read Online

ইন্দুবালা ভাতের হোটেল PDF রিভিউ | কল্লোল লাহিড়ী | Read Online

ইন্দুবালা ভাতের হোটেল রিভিউ pdf

যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

বইঃ ইন্দুবালা ভাতের হোটেল
লেখকঃ কল্লোল লাহিড়ী

“এক দেশ থেকে অন্য দেশে যাওয়া মানুষের ভিড় বাড়ে।
পাসপোর্টে ছাপ পড়ে। বাক্স প্যাঁটরা নিয়ে ইমিগ্রেশন পার করে মানুষ। এক সময়ে যে দেশটা নিজের দেশ ছিল সেটারই বেড়া টপকায়। প্রত্যেক বছর বৃষ্টি আসে নিয়ম করে দু দেশেই। তবুও সীমান্তের দাগ মুছে যায় না সেই জলে।ওটা ইন্দুবালার দাদুর স্বপ্ন হয়েই থেকে যায়।”

খুলনার কলাপাতার মেয়ে ইন্দুবালাকে তার বাবা কলকাতার ছেনু মিত্তির লেনের এক মাতাল ছেলের সাথে বিবাহ দেয়। বিবাহের কিছু বছরের মধ্যেই তিন সন্তানকে রেখে ইন্দুবালার স্বামী মাস্টার রতনলাল মল্লিক মারা যায়।তারপর থেকে ইন্দুবালা তার সন্তানদেরকে লালন পালনের জন্য ছেনু মিত্তির লেনের সেই পুরোনো দুতলা বাড়িতে খোলেন ইন্দুবালা ভাতের হোটেল। যেখানে তার সহসঙ্গী ছিল অজ পাড়াগাঁ থেকে আসা ধনঞ্জয় ও মাছওয়ালী লছমী। কুমড়ো ফুলের বড়া, কুমড়োর ছক্কা, বিউলির ডাল, ছ্যাঁচড়া, মুড়িঘন্ট, আম তেল, মালপোয়া, কুচো চিংড়ির ঝোল, চিংড়ির হলুদ গালা ঝোল, চন্দ্রপুলি, কচু বাটা, শিমাইয়ের পায়েস সহ নানা দিনে নানা রকমের খাবার পাওয়া যেত ইন্দুবালার ভাতের হোটেলে।

তিন সন্তানকে লালন পালন করার সাথে সাথে নিয়মতান্ত্রিকভাবে ইন্দুবালা তার ভাতের হোটেল চালিয়ে যেত।সন্তানেরা বড় হয়ে গেলে তাদেরকে আলাদা করে দেয় ইন্দুবালা; পড়ে থাকে তার ভাতের হোটেল নিয়ে। নিঃসঙ্গ ছেনু মিত্তির লেনের ভাতের হোটেলে রান্না করার সাথে সাথে ইন্দুবালা ভাবতে থাকতে তার খুলনার কলপোতার গ্রামের কথা, তার পরিবারের সাথে কাটানো সময়গুলোর কথা, তার জীবনের প্রথম প্রেম মনিরুলের কথা, মনিরুলকে না বলতে পারা ভালোবাসার কথা, মুক্তিযুদ্ধের সময় মনিরুলের মৃত্যুর কথা, খুলনা থেকে কলকাতায় আসার কথা, দেশভাগের কারণে খুলনায় না যেতে পারার মনোবাসনা, স্বামীর মৃত্যর পর তার জীবনসংগ্রামের কথা,তার হোটেলে গভীর রাতে খেতে আসা মানুষগুলোর কথা। তার জীবনসংসার গড়ে ওঠে এই ভাতের হোটেলকে কেন্দ্র করে। তার কাছে সবাইকে ঠিকমতো খাওয়ানোই তার দায়িত্ব। ইন্দুবালার জীবনের কত কত অপূর্ণতার মাঝেও তার পূর্ণতা “ইন্দুবালা ভাতের হোটেল”।

Download Now

পাঠকদের জন্য সাজেশান আপনি যে জনরার বই পড়তেই স্বাচ্ছন্দবোধ করেন না কেন, এই বইটি আপনাকে হতাশ করবেনা। বইটা শুধু খাবার সম্পর্কিত ভেবে ভুল না করে পড়া শুরু করে দিন।

লেখক পরিচিতিঃ

কল্লোহ লাহিড়ী একজন লেখক, তথ্যচিত্র নির্মাতা, ফিল্ম, টেলিভিশন ধারাবাহিক ও ওয়েব সিরিজের চিত্রনাট্য রচয়িতা। সিনেমা/চলচ্চিত্র নিয়ে থাকলেও তাঁর লেখা ইন্দুবালার ভাতের হোটেল এবং বাবার ইয়াশিকা ক্যামেরা উপন্যাস দুটি খুবই জনপ্রিয় ।

রিভিউ করেছেনঃ Munzeera Eshita

Download Now

আরও পড়ুনঃ আরণ্যক PDF | উপন্যাসের বিষয়বস্তু | রিভিউ | বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়


“ইন্দুবালা আজও বিশ্বাস করেন অতিথির কোনো ধর্ম হয় না। বর্ণ হয় না। জাত, গোত্র কিচ্ছু না। অতিথি হন ঈশ্বর।”

কল্লোল লাহিড়ীর লেখা এই উপন্যাসটি সত্যি অসাধারণ একটি উপন্যাস। এটা শুধু রান্না বিষয়ক বই নয়, বা গ্রামের ভাতের হোটেলের কাহিনীও না। এতে মিশে আছে একটি নারীর লড়াই করে বেচেঁ থাকার গল্প। গল্পের কাহিনী ইন্দুবালা আর তার ভাতের হোটেলকে ঘিরে। ইন্দুবালা, যার জন্ম খুলনার কলাপোতা গ্রামে হলেও বিয়ে করে চলে আসেন কলকাতা। স্বামীর মৃত্যুর পর সন্তানদের অন্ন জোগাতে খোলেন “ইন্দুবালা ভাতের হোটেল”। এই হোটেলের সাথে জড়িয়ে আছে তার জীবনের অসংখ্য স্মৃতি। জীবনের শেষ সময় পর্যন্ত সেই হোটেল আঁকড়ে থাকেন ইন্দুবালা, এক সংগ্রামী নারী!

বইটিতে মোট আটটি অধ্যায় আছে। প্রতিটি অধ্যায়ের নামকরণ বিভিন্ন খাবারের নামে। ‘আম তেল’, ‘ছ্যাচড়া’, ‘কচু বাটা’, ‘চন্দ্রপুলি’, ‘চিংড়ির ঝোল’, ‘আমড়ার চাটনি’, ‘নারিকেল কুচে মাছের ঝোল’, ‘মুড়িঘণ্ট’। তবে ছ্যাচড়া অধ্যায়ের নামকরণ সবচেয়ে সার্থক মনে হয়েছে।

Download Now

খাবারের বর্ণনা, ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, দেশ ভাগ, সম্পর্কের কাঁটাতার না পেরোনোর আক্ষেপ, ঘুরে দাঁড়ানোর গল্প। গল্পই গল্পকে এগিয়ে নিয়ে চলে। গল্প কেন বলছি আজকের দিনে দাঁড়িয়ে অন্তত এটুকু বলতে পারি অনেক মানুষেরই ভাগ্য ইন্দুবালার মতোন। কিন্তু ক’জন ঘুড়ে দাঁড়ানোর ক্ষমতা রাখেন?

অসাধারণ একটি প্রেমের উপখ্যান পাবেন বইটিতে। এই প্রেমের ঘটনা জানার জন্য বইয়ের শেষ পর্যন্ত নিয়ে যাবে। এই বইয়ে মনিরুল একটা আবেগের নাম।

আরও পড়ুনঃ আদর্শ হিন্দু হোটেল PDF রিভিউ | বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

যাইহোক, একটু ভিতরে যাওয়া যাক। ইন্দুবালার ঠাম্মীর কাছ থেকে শিখে নেওয়া গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী খাবারের স্বাদ যে একবার এি হোটেল থেকে গ্রহণ করে সে বার বার ফিরে আসে।

Download Now

জীবন সংগ্রামী ইন্দুবালা, যাকে ছোট বয়সেই খুলনার কলাপোতা গ্রাম থেকে ওপার বাংলা কলকাতার ছেনুমিত্তির লেনে উঠে এসতে হয়েছিলো। সাথে নিয়ে এসেছিল এক বুক ভরা স্বপ্ন। কিন্তু দূর্ভাগ্য সব স্বপ্ন তাকে সেদিনই বাড়ির বাহিরে ফেলে আসতে হয়েছিলো।

ভেবেছিলো মাস্টার মশাই মানে ইন্দুবালার স্বামী কোন এক স্কুলের টিচার। কিন্তু কে জানত সে যে তাসখেলা কিংবা বোতলের পানি খাওয়ার মাস্টার। ইন্দুকে হতে হয়েছিল বাচ্চা পয়দা করার মেশিন। কে জানত তার ভাগ্যে এমন নির্মম পরিহাস? একে একে বাবা, ভাই, ভালোবাসা সেই মুসলিম মনিরুল ছেলেটাও মরে গেল। হারাতে হলো স্বামী, শাশুড়িকে। তিনটি সন্তান কে নিয়ে বেঁচে থাকার কঠিন লড়াই।

কত কত দূর থেকে আসা মাছ ওয়ালী লছমী মেয়েটার মাছের টাকায় শুরু করা ইন্দুবালা ভাতের হোটেল। তারই খাওয়ার আবদারে রান্না করতে বসে যান ইন্দুবালা। রান্না করেন মা-দাদীর কাছ থেকে শেখা কম খরচের একদম দেশীয় খাবার। খাবারের সুঘ্রাণ ছড়িয়ে পরে আশে পাশে। লছমী খাবারের স্বাদে তাজ্জব বনে যায়। বায়না ধরে টাকার বিনিময়ে প্রতিদিন খাওয়ার। এভাবে প্রতিদিন নিত্য নতুন ভিন্ন দেশীয় খাবারের ঘ্রান ইন্দুবালার বাসার নিচতলা হতে ছড়িয়ে পরে আশে পাশের সকল জায়গায়। সে ঘ্রাণে একে একে সকলে খেতে চলে আসে ইন্দুবালা ভাতের হোটেলে। চেটে পুটে খেয়ে যায় সবাই, অভাব দূর হয় তার। যা এখনো মানুষের মুখে মুখে ভেসে বেড়ায় ।

আরও পড়ুনঃ ছুটি গল্প PDF | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছোট গল্প | Chuti | বিষয়বস্তু | চরিত্র

বই এর প্রতিটি চ্যাপ্টার এর মাঝে বিভিন্ন কাহিনী লুকোনো আছে। এমনকি এটা পড়ার পর কাহিনীর মাঝে নিজেকে জড়িয়ে ফেলছিলাম মনে পড়ে যাচ্ছিলো ছোট বেলার স্মৃতি।

ছোট বেলায় বড় দাদীর হাতে রান্না করা সেই মোমের মত কচুর তরকারি চোখে ভাসছে। নিজেকে ইন্দুবালা ছোট ছেলে সুজিত এর সাথে তুলনা করতে ইচ্ছে করছে। ইন্দুবালার ছেলে মেয়েদের জন্যে তৈরি করে রাখা নারিকেলের চিড়ার সাথে, দাদুর এর বানানো নারিকেল চিড়ার স্মৃতি মনে পড়ে যাচ্ছে।

Download Now

আজ সত্তর বছর এ পা দেওয়া ইন্দুবালা এক মুহূর্তের জন্যেও তার ভাতের হোটেল কে আড়াল করেন নি। যার কারণে ছেলে মেয়েদের বাড়িতে পর্যন্ত জান নি, যান নি পূজা দিতেও। তবে তার মনে ছিল ছেলে মেয়েদের প্রতি অসীম ভালোবাসা। ভালোবাসা ছিলো ছেনুমিত্তির লেনে আসা প্রতিটি কাস্টমারের প্রতি। ছিলো দায়িত্ববোধ একা একা সব কিছু সামাল দিচ্ছিলেন……….. হটাৎ লাছমী এসে দরজায় দাড়িয়ে কড়া নাড়লো, ঘুমিয়ে পড়লো ইন্দুবালা। শেষ হলো সংগ্রামী নারীর জীবন জীবন।

এখন ইন্দুবালা ভাতের হোটেল এর কি হবে? কি হবে এতো এতো মানুষের যারা ইন্দুবালার হোটেলকে তাদের দ্বিতীয় ঘর ভেবে নিয়েছিল?

আরও পড়ুনঃ বেগ বাস্টার্ড সিরিজ রিভিউ | Beg Bastard Series PDF | সকল পর্ব পিডিএফ

Tags:
x
error: Content is protected !!