যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
বইঃ চোখের বালি
লেখকঃ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
রিভিউ করেছেনঃ Shuvra Chakraborty
চোখের বালি উপন্যাসের নায়ক মহেন্দ্র। মায়ের অতি আদরের ছেলে। মহেন্দ্রের মা রাজলক্ষ্মী, যে এই উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে। তার ছোট্ট কারসাজিতেই মূল চরিত্রগুলোর মধ্যে দ্বন্দ্ব সৃষ্টি হয়। মহেন্দ্রের বন্ধু বিহারি। অন্নপূর্ণা মহেন্দ্রের কাকি। অন্নপূর্ণা এবং রাজলক্ষ্মী বিহারীকে সন্তানের ন্যায় স্নেহ করতো। একসময় অন্নপূর্ণা বিহারীকে প্রস্তাব দেয় তাই ভাইঝি আশালতাকে বিয়ের জন্য। বিহারী সম্মতি প্রদান করে। কিন্তু আশালতাকে দেখতে গিয়ে মহেন্দ্র আশালতাকে পছন্দ করে বসে (যদিও ছোটবেলা থেকে চিনতো) এবং একপর্যায়ে মায়ের অমতে সহজ-সরল আশালতাকে বিয়েও করে। একপর্যায়ে সন্তানের উপর অভিমান করে রাজলক্ষ্মী বাপের বাড়ি চলে যান এবং আসার সময় নিয়ে আসে “বিনোদিনীকে”। সেই থেকেই মূলত ভাঙনের শুরু।
বিনোদিনী রাজলক্ষ্মীর ছোটবেলার বন্ধু হরিমতির মেয়ে। রাজলক্ষ্মী তার সাথে একসময় মহেন্দ্রের বিয়ে ঠিক করলেও মহেন্দ্রের অমত থাকার কারণে তাদের বিয়ে হয় না। বিনোদিনীর বিয়ে হয়ে যায় অন্য একজনের সাথে,কিছুদিনের মধ্যেই সে বিধবা হয়। বিনোদিনী শিক্ষা দীক্ষা সেবা সাহচর্যে ছিল অতুলনীয় এক নারী। মহেন্দ্রের প্রত্যাখ্যান তাই এত সহজে সে ভুলে যেতে পারে নি। ফলে মহেন্দ্রের বাড়ি এসে মহেন্দ্রের স্ত্রী আশালতার সাথে সে সম্পর্ক পাতায়, যার নাম -চোখের বালি (চক্ষুশূল)।
মহেন্দ্রের কাছ থেকে অতীতের প্রতিশোধ নিতে সে মহেন্দ্রকে তার প্রেমের মায়াজালে ফেলার চেষ্টা করে,এবং একসময় সফল হয়। কিন্তু বিনোদিনীর শ্রদ্ধা এবং ভালোবাসা দুটোই ছিল নিষ্ঠাবান,জ্ঞানী বিহারীর প্রতি। মহেন্দ্রকে প্রেমের জালে ফেলে বিনোদিনী অধরাই থেকে যায়। একপর্যায়ে বিহারী বিনোদিনীকে বিয়ে করতে চাইলে সে আপত্তি করে লোকলজ্জার ভয়ে। অতঃপর বিনোদিনী কাশিতে চলে যায়। এভাবেই পুরো উপন্যাসটি জুড়ে প্রেম-প্রতাপের বিষয়টি উপন্যাসটিকে সৌন্দর্যমন্ডিত করেছে।
আরও পড়ুনঃ সোনার তরী কাব্যের মূলভাব আলোচনা PDF | Sonar Tori Poem
উপন্যাসটিতে বেশ কিছু উক্তি মনে ধরেছে সেগুলো উল্লেখ করছি-
সুখ যখন তোমার হাতেই আছে, তখন তাকে এমনভাবে ভোগ করো, যাতে কারো হিংসে না হয়।
অন্যকে দোষী করিয়া যেটুকু সুখ, দোষ মনে রাখিবার দুঃখ তার চেয়ে অনেক বেশি।
যেখানে দাবী করা চলে, সেখানে ভিক্ষা কেন?
অধিকার লাভের যে মর্যাদা আছে, সে মর্যাদা রক্ষা করিতে হইলে, অধিকার প্রয়োগকে সংযত করিতে হয়।
যাহার পালাইবার রাস্তা নাই তাহাকে আবার বাধিবার চেষ্টা কেন?
আরও পড়ুনঃ হৈমন্তী গল্পের বিষয়বস্তু | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Hoimonti Summary PDF
বাংলা সাহিত্যের মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রচিত চোখের বালিকে বলা হয় বাংলা সাহিত্যের প্রথম মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস। উপন্যাসের যে শাখায় ঘটনার পটভূমি, কাহিনী, চরিত্র ইত্যাদির চেয়ে মানব মনের চেতন-অবচেতন ও প্রাক চেতন এর বিশ্লেষণ বেশি গুরুত্ব পায় তাকেই মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস বলে। বঙ্কিমের “বিষবৃক্ষ” এবং শরতের “চরিত্রহীন” -কে মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাসের উদাহরণ বলা যায়। এছাড়া মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেশ কিছু উপন্যাস মনস্তাত্ত্বিক ধর্মী। বাংলা সাহিত্যের বাইরে ফিওদর দস্তয়েভস্কির লেখা “ক্রাইম অ্যান্ড পানিশমেন্ট” উপন্যাসটিকে পৃথিবীর অন্যতম সেরা মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস বলা চলে।
আরও পড়ুনঃ যে বইগুলো জীবনে একবার হলেও পড়া উচিত | ৫০০ বইয়ের তালিকা