যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
জান্নাতুন নাঈম প্রীতির আত্মকথা “জন্ম ও যোনির ইতিহাস” বইটি নিয়ে যে যাই ই বলুক বা নিষিদ্ধ করুক একদিক দিয়ে কিন্তু তা সফল। সোজা কথা টপটপিক। সমাজের অন্তকথার বাস্তব চিত্র। সামাজিক নষ্ট জীবগুলোর মুখোশ উন্মোচন। এর আগে কিছু নষ্টের মুখোশ উন্মোচন করেছিলেন তসলিমা নাসরিন।
সাহসী পদক্ষেপ। বইটি নিষিদ্ধ না করে এর ঘটনা প্রবাহ নিয়ে মামলা হোক। প্রমানিত হোক কারা শয়তান, আর কারা সাধুবাবা। আসলে যত আলোচনা সমালোচনা এই একটা অধ্যায় নিয়ে “আমার পুরুষেরা”। আত্মজীবনীতে তো মানুষ নিজের কথায় লিখে, এখানে লেখক Jannatun Nayeem Prity তার নিজের কথায় লিখেছে, কিন্তু মানুষতো আর একা চলে না, মানুষের আশেপাশে মানুষ রাষ্ট্র সমাজ রাজনীতি থাকে তিনি সবার কথায় লিখেছে।
এখানে অনেকের নাম প্রকাশ করাতে অনেকের বদহজম হয়েগেছে। যাদের সমাজ সংসার নিয়ে এতো ভাবনা, তারা লুকিয়ে লুকিয়ে না শুলেই পারে। যা কখনো প্রকাশ পেলে সম্মান হানীর ভয় থাকে সে কাজ না করলেই পারে। আসলে সবাই মুখোশ পরে থাকতে চায়, বাঙালি মাত্রই মুখোশ প্রিয়, এখন মুখোশ ধরে টান দিলেই যত সমস্যা। মোদ্দা কথা হলো শুয়াতে সমস্যা নয়, সমস্যা হচ্ছে প্রকাশে!
তবে লেখকের জয়া, পরীমণি, শিপ্রার ক্ষেত্রে ছদ্মনাম ব্যবহার করা অবশ্যই উচিৎ ছিল।
আরও পড়ুনঃ হাট্টিমাটিম টিম ছড়াটির লেখক কে? সম্পূর্ণ কবিতার আসল রচয়িতা কে?
যেকারণে এই বইয়ের নাম- ‘জন্ম ও যোনির ইতিহাস’ :
এটি শুধুমাত্র একজন নারীর আত্মকথা নয়, বরং সমাজ ও রাজনীতির ভিক্টিম একজন প্রতিবাদী মানুষ হিসেবে সংগ্রামের আখ্যান। মূলত এই বইটি মানবাধিকারের জন্য লড়াই করা মানুষদের জন্য একটি প্রামাণ্য দলিল, যেখানে রাষ্ট্র, সমাজ, পরিবার নামক আয়নায় ক্ষতবিক্ষত একজন মানুষ কেমন করে বাঁচে, তা উঠে এসেছে এর নিগূঢ় ও নিখুঁত ব্যক্তিগত হয়েও বৈশ্বিক বয়ানে।
পাশাপাশি উঠে এসেছে সারা পৃথিবীতে অন্যায় আর দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে ন্যায়ের সংগ্রামের স্বরূপ।
বইটির উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এই বইয়ের সততা, যেকারনে এই বইয়ের লেখককে সময় নিতে হয়েছে প্রায় দুই বছর। নিরাপত্তার খাতিরে দেশত্যাগ করে প্যারিসে নির্বাসনের নিরাপদ আশ্রয়ে গিয়ে তিনি বইয়ে লিখেছেন সেইসব সত্য, যেসব সত্য ইতিহাসের প্রামাণ্য দলিল হিসেবে রয়ে যাবে মানবসভ্যতার ইতিহাসকে উজ্জীবিত করতে।
লেখক বিশ্বাস করেন- ইতিহাস বলে যা লেখা হয় সেটা বিজয়ীর হাতে লেখা বাকোয়াজ। কিন্তু ‘ইতিহাস লেখার ইতিহাস’টি লিখতে পারেন একজন সত্যিকারের লেখক যিনি নিজেই একটা জীবন্ত দলিল। তার হৃদয়ে জমা ব্যথা, দাগ আর নির্যাতনের চিহ্নগুলোই মূলত সেই ইতিহাস যা শাসকের চোখ এড়িয়ে লিখে রাখে মহাকাল। কারণ সেটাই মানবাধিকারের পক্ষে মানুষের সংগ্রামের একমাত্র ইতিহাস।
তাই, প্রিয় পাঠক- নারীবাদ, মৌলবাদ থেকে শুরু করে কাঁটাতার এবং বিভেদে ভরা দুনিয়ায় তথাকথিত রাষ্ট্রীয় ও ধর্মীয় আইনকে চ্যালেঞ্জ করা একজন নারীর বয়ানে শ্বাসরুদ্ধকর ইতিহাস লেখার এই ঐতিহাসিক যাত্রায় আপনাকে স্বাগতম!
বই: জন্ম ও যোনির ইতিহাস
প্রকাশক: নালন্দা
প্রথম প্রকাশ: একুশে বইমেলা ২০২৩
আরও পড়ুনঃ জাতীয় পরিচয়পত্র, জন্ম-সনদ অথবা সার্টিফিকেটে নামের ভুল সংশোধন
আত্মজীবনী মানে নিজের প্রাইভেসি নিজে ব্রেক করা, নিজের সম্পর্কে যত তথ্য তা নিজের মতো করে বলা। খুশবন্ত সিং আত্মজীবনীতে অমৃতা শেরগিলের কথা লিখলে সেটা শিল্প, মার্কেজ আত্মজীবনীতে তার জীবনের সকল নারীর সাথে সঙ্গমের কথা নির্বিকারভাবে লিখলেও তা শিল্প। ভ্যান গখ বে/শ্যার পাওনা পরিশোধ না করতে পেরে নিজের কান কেটে ফেললেও শিল্প, বোদলেয়ার মায়ের কাছে বে/শ্যার পাওনা মেটাতে মিথ্যে বলে টাকা নিলেও শিল্প!
তারা মহান, কারণ তারা পুরুষ।
কিন্তু, কত্তবড় সাহস! তুমি মেয়ে হয়ে তাদের নিয়ে লিখবা কেন?
তুমি লিখবা তোমার পবিত্রতা রক্ষার ইতিহাস!
কেন মহান পুরুষদের হেরে-মখানার নারীদের নিয়ে কথা বলবা?
কেন তুমি প্রশ্ন তুলবা শামসুন্নাহার স্মৃতি ‘পরী’ হয়ে ওঠে কাদের ইশারায়?
কেন প্রশ্ন তুলবা জয়ারা ডিভোর্সের পরেও আহসানই কেন থাকে?
সকালবেলা উঠে দেখি আমার বইয়ের একটা পেজ অনলাইনে ভাইরাল হয়ে গেছে!
বাকি পেজগুলো কি দোষ করলো, সেটা বুঝলামনা। আপনারা একটু সাহস করে বাকি পেজগুলোর দুই একটা পাবলিশ করে দেন। বাকি পেজগুলোতো আপনাদের আর আপনাদের অসাধারণ পুরুষতন্ত্রের চরিত্র, তাইনা?
হুমায়ুন আজাদ লিখেছিলেন- বাঙালির আত্মজীবনী হলো শয়তানের হাতে লেখা ফেরেশতার আত্মজীবনী। আমি ফেরেশতা না, আমার সকল কামনাবাসনা নিয়ে আমি নারী ও মানুষ। আমার বইয়ের প্রতিটি লাইন আপনাদের সকল অনুভূতির পর্দা ছিঁড়ে দেয়ার স্পর্ধা দেখাবে।
প্রিয় সমাজ, প্রিয় সুবিধাভোগী ছদ্মবেশী, জেনে রাখো- তোমাকে আমার নাম লিখে রাখতে হবে সেইখানে যেখানে আমার নাম লিখলে তোমার আমাকে প্রতিদিন অস্বীকার করতে হবে!
আমি লিখে দিচ্ছি- তুমি আমাকে ভুলতে পারবানা। কারণ আমি তোমার গোলাপ না, গোলাপের কাঁটা।
মনে থাকবে?
লিখেছেনঃ জান্নাতুন নাঈম প্রীতি
আরও পড়ুনঃ বাংলা গালি অভিধান PDF রিভিউ Bangla Gali Ovidhan PDF