যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
ক. জন্মঃ
সুকান্ত ভট্টাচার্যের জন্ম হয়েছিল ১৩৩৩ সালের ৩০শে শ্রাবণ (১৫ই আগস্ট, ১৯২৬ ইংরেজি) । মাতামহ সতীশচন্দ্র ভট্টাচার্যের ৪২নং মহিম হালদার স্ট্রিটের বাড়ির দোতলার একটি ছোট্ট ঘর । দিনটি ছিল রোববার।
খ. বালক সুকান্তঃ
সুকান্তের পিতা শ্রী নিবারণ চন্দ্রের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী শ্রীমতি সুনীতি দেবীর কোল আলো করে বেড়ে উঠেছিল সুকান্ত। কিন্তু সুকান্তের বয়স যখন ১২ বছর তখন ১৯৩৮ সনে ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সুকান্তের মা মারা যায়। সেই থেকে তিনি পিতামহের বাড়িতে প্রতিপালিত হন।
সুকান্তদের একান্নবর্তী পরিবার সব সময় লোকে সরগরম থাকতো। সাহিত্য- সংস্কৃতির চর্চার ভাবি সুন্দর একটা পরিবেশ ছিল সুকান্তের বাড়িতে। শিশু সুকান্তের দিন কাটতো ঠাকুরমার ঘরে কিংবা কখনো তাঁর প্রিয় রাণীদির কোলে। রাণীদি সুকান্তের জেঠতুত বোন ছিলেন। এই রাণীদিই সুকান্তের নাম রাখেন ।
সুকান্তের দাদু সতীশচন্দ্র জ্ঞানী লোক ছিলেন। তাঁর উৎসাহে বাড়িতে “সংস্কৃত সাহিত্যচক্র” নামে একটি সংস্থা গড়ে উঠেছিল। প্রায়ই সাহিত্য আসর বসত। সেই আসরে বসে থেকেই সুকান্ত সাহিত্যের প্রতি আগ্রহী হয়ে উঠেন ছেলেবেলা থেকেই।
গ. ছাত্র সুকান্তঃ
সুকান্তের লেখাপড়া শুরু হয় স্থানীয় কমলা মন্দির প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষা শেষে তিনি বেলেঘাটা দেশবন্ধু উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন । স্কুল জীবনেই তিনি রাজনৈতিক অঙ্গনে দ্রুত প্রবেশ করেন।
সুকান্ত বইয়ের পোক ছিলেন। কিন্তু পাঠ্য বইয়ের প্রতি তাঁর ঝোঁক ছিল কম। পরীক্ষার সময়ও পাঠ্য বই বহির্ভূত বই পড়ার কারণে তিনি বরাবর খারাপ ফলাফল করতেন। পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ার সময় “পথের পাঁচালী” পড়েছিলেন তিনি। বঙ্কিম সাহিত্য এবং রবীন্দ্রনাথের রচনা তিনি খুব বাল্যকালেই পড়া শুরু করেন। সপ্তম শ্রেণীতে অধ্যয়ন কালেই তিনি ব্রাউনিং-শেলির কবিতা বুঝতেন চমৎকার । আশ্চর্য এক প্রতিভা।
ছাত্র অবস্থায়ই সুকান্ত কোলকাতা রেডিওর গল্পের আসরের সভ্য ছিলেন, আনন্দবাজার পত্রিকার শিশু বিভাগের আনন্দ মেলার সভ্য হয়েছিলেন তিনি। ১৯৪২ সালে অষ্টম শ্রেণীতে অধ্যয়নকালে তিনি আন্দোলনে যোগ দিয়ে স্কুল কর্তৃপক্ষের বিরাগভাজন হন। অন্য একটি স্কুল থেকে তাঁকে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিতে হয়েছিল। কিন্তু দু’বারেও পাশ করতে পারলেন না। এই ব্যাপারে কিশোর সুকান্তের সরল স্বীকারোক্তি-
“কোন কাজটাই পারিনাকো বলতে পারি ছড়া,/পাশের পড়া পড়ি না ছাই পড়ি ফেলের পড়া।/পড়তে বসে থাকে আমার পথের দিকে চোখ,/পথের চেয়ে পথের লোকের দিকেই বেশি ঝোঁক।”
“এক যে ছিল”তেও লেখাপড়ার স্বরূপ কিছুটা উদ্ঘাটিত হয়েছে।
“এক যে ছিল আপন ভোলা কিশোর,/ইস্কুল তার ভাল লাগত’/সহ্য হত না পড়াশুনার ঝামেলা/আমাদের চলতি লেখাপড়া সে শিখল না কোনোকালেই,/অথচ সে ছাড়িয়ে গেল সারাদেশের সবটুকু পাণ্ডিত্যকে।”
আরও পড়ুনঃ কবিতা সমগ্র অদ্বৈত মল্লবর্মণ PDF রিভিউ | Kobita Somogro Poem
তথ্যসূত্রঃ
১. ১৩৫৪ সালের ‘পরিচয় শারদীয়'তে শ্রীযুক্ত জগদীশ ভট্টাচার্য কর্তৃক লিখিত কবি কিশোর নামক প্রবন্ধের অংশবিশেষ।
২. বদরুদ্দীন উমর, ২৫শে বৈশাখ, ১৩৭৭, ঢাকা।
৩. বন্ধু অরুণাচলকে লেখা সুকান্তের দীর্ঘতম এক ঐতিহাসিক চিঠির অংশবিশেষ।
৪. মার্কসীয় অর্থনীতির মূল সূত্র : এল. লিয়ন তিয়েভ।
৫. সাহিত্য চর্চা, বুদ্ধদেব বসু ।
৬. রবি রশ্মি। চারু চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায় এম. এ.।
৭. বাংলা সাহিত্যের খসড়া। শ্রী প্রিয় রঞ্জন সেন।
৮. সুকান্ত কবি ও মানুষ। সামাদ সিকদার। (ভূমিকার ক্ষেত্রে সামাদ সিকদারের সুকান্ত কবি ও মানুষ বইটি অনেক জায়গায় ব্যবহৃত হয়েছে। সামাদ সিকদারের কাছে ঋণ স্বীকার করছি।)