যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
বইঃ স্মৃতিবিচিত্রা ও অগ্রন্থিত গল্প
লেখকঃ আবু ইসহাক
ধরনঃ গল্পগ্রন্থ
রিভিউ করেছেনঃ Jhairul Hassan Apon
আবু ইসহাক বইটিতে তাঁর জীবনের নানা সময়ের স্মৃতি গল্প আকারে তুলে ধরেছেন। বইটির একটি গল্প হলো অম্লান স্মৃতি। গল্পটিতে লেখক পল্লী কবি জসীম উদ্দীন এর সাথে তার সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করেছেন।
আবু ইসহাক পেশাগত জীবনে পুলিশ বিভাগে চাকরি করতেন। সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা মোকাবিলা করার জন্য তার ডিউটি পড়ে রায়ের বাজারে। সেখানে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি গড়ার জন্য কবি জসীম উদ্দীন মিটিং করবেন।
মিটিংয়ে কবির সাথে লেখকের পরিচয় হয়। লেখক কবিকে জানান তিনি একটা উপন্যাস লিখেছেন। কিন্তু প্রকাশ করার জন্য কোনো প্রকশনা খুঁজে পাচ্ছেন না। কোনো প্রকাশকই তার লেখা ছাপতে রাজি নয়। কবি জসীম উদ্দীন তাকে ছুটির দিন রবিবারে কবির বাসায় দেখা করতে বলেন।
আবু ইসহাক কবির বাসায় গেলে কবি আবু ইসহাক- কে পান্ডুলিপি পড়ে শোনাতে বলেন। আবু ইসহাক তিনটি অধ্যায় পড়া শেষ করলে কবি তাকে বলেন “লেখার হাত ভালো। লেখা চালিয়ে যাও। লেখা ভালো হলে প্রকাশক লেখা ছাপাবে।” আবু ইসহাক এই ভেবে খুশি হোন যে কবি তার লেখার প্রশংসা করেছেন। তবে ব্যথিত হোন এই ভেবে যে, তবে কী সূর্য দীঘল বাড়ী ছাপানোর মতো কোনো উপন্যাস নয়?
এর চার বছর পর কলকাতা থেকে আবু ইসহাক এর সূর্য দীঘল বাড়ী প্রকাশিত হলে চারদিকে উপন্যাস এর ব্যাপক আলোচনা সমালোচনা হতে থাকে। আবু ইসহাক চাকরিসূত্রে করাচিতে চলে যান। করাচিতে আবু ইসহাক এর সাথে কবি জসীম উদ্দীন এর দেখা হলে তিনি বলেন-
“ভাই ইসহাক আমি তোমার ওপর সুবিচার করিনি। তোমার উপন্যাস কিছুটা তুমি পড়ে শুনিয়েছিলে। অতটুকু শুনে তখন উপন্যাসটির মূল্যায়ন করতে পারিনি। এজন্য আমি তোমার কাছে ক্ষমা চাইব কি, আমি নিজেকেই ক্ষমা করতে পারছি না।”
আরও পড়ুনঃ জাল আবু ইসহাক PDF | গোয়েন্দা উপন্যাস বুক রিভিউ | Jal Abu Ishak
কবির সাথে আবু ইসহাক’র বেশ মধুর সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কবি করাচিতে গেলে প্রত্যেকবার আবু ইসহাক কে ফোন করতেন, দেখা করতেন, তার বাসায় যেতেন,তার বাসায় খাওয়া-দাওয়া করতেন। কথাপ্রসঙ্গে কবি জসীম উদ্দীন একদিন আবু ইসহাক-কে বলেন-
“তুমি যেমন উপন্যাসের প্রকাশক পাও নি, আমারও একই অবস্থা হয়েছিল। আমার গানের বই ‘রঙিলা নায়ের মাঝি’ কলকাতার কোনো প্রকাশক ছাপতে রাজি হয়নি।”
তখন কবি তার হিন্দু বন্ধুর সাহায্যে বইটি ছাপেন। তবে ছাপার জন্য কাগজ জসীম উদ্দীন দিয়েছিলেন। তারপর ‘রঙিলা নায়ের মাঝি’ এবং ‘নিশীথে যাইও ফুল বনে রে ভোমরা’-র গানের রেকর্ড বের হয়। রেকর্ড থেকে রয়েলটি হিসাবে কবি পেয়েছিলেন দশ হাজার টাকা।
বইটি পড়লে আবু ইসহাক ও পল্লী কবি জসীম উদ্দীন সম্পর্কে আপনি অনেক কিছু জানতে পারবেন।