যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
বইঃ আরণ্যক
লেখকঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়
প্রকাশকঃ সূর্যোদয় প্রকাশন
পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৭৫
বইটির প্রেক্ষাপটঃ
“আরণ্যক” বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মৃতিচারণমূলক উপন্যাস। উপন্যাসের প্রেক্ষাপট গড়ে উঠেছে কলকাতা শহর থেকে বহু দূরে নাঢ়া বইহার ও লবটুলিয়া বইহারসহ পার্শ্ববর্তী এলাকাকে কেন্দ্র করে। যেখানে স্থান পেয়েছে বিংশ শতাব্দীর নাঢ়া বইহার ও লবটুলিয়া বইহারের প্রাকৃতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও অর্থনৈতিক পরিবেশের এক সামগ্রিক চিত্র।
বইয়ের কাহিনীঃ
কলকাতা শহরে বেড়ে ওঠা লেখক যখন চাকরি সূত্রে লবটুলিয়া বইহারে যায়; তখন প্রথমদিকে সেখানকার পরিবেশকে অদ্ভুত মনে হলেও ধীরে ধীরে তিনি লবটুলিয়া বইহারের প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে মিশে যেতে থাকে। লবটুলিয়া বইহার থেকে আসার পর তার স্মরণে থাকা স্মৃতিগুলোই উপন্যাসে ফুটিয়ে তোলেন। বইহারের গভীর রাতের জোৎস্না, জঙ্গলের নাম না জানা বাহারি গাছপালা, পাহাড়, সেখানকার মানুষের জীবনযাত্রা, খাদ্য, বেঁচে থাকার সংগ্রাম সবকিছুই লেখককে এক অন্য জগতের সাথে পরিচয় করিয়ে দেয়।
বইটি পড়ার পর অনুভূতিঃ
লেখকের সম্মোহনী লেখার শক্তির জন্যই বইটি পড়তে পড়তে লবটুলিয়া বইহারের জঙ্গলের ছবি যেন চোখে ভেসে উঠছিল। সেখানকার মানুষগুলো রাজু পাঁড়ে, গনু হাতো, গনোরী, যুগলপ্রাসাদ, আসরফী, মঞ্চী, ভানুমতি, গাঙ্গোতা ও রাজপুত গোত্রের মানুষগুলোর ছবি যেন কল্পনায় একেঁ ফেলেছিলাম। ছয় সাত বছর লবটুলিয়াতে কাটানোর পর স্থান ও মানুষগুলো প্রতি মায়া পড়ে যাওয়া লেখক যখন লবটুলিয়া বইহার থেকে কলকাতায় ফিরে আসছিলো তখন নিজের মনের মধ্যেও যেন মোচড় দিয়ে উঠছিল। স্থান ও ব্যক্তির মায়া বড়ই অদ্ভুত। লেখকের মতো আমারও ম্মৃতিতে আজীবন কল্পনা হয়ে থাকবে লবটুলিয়া বইহারের সেই প্রাকৃতিক পরিবেশ ও মানুষগুলোর গল্প।
আরও পড়ুনঃ আদর্শ হিন্দু হোটেল PDF রিভিউ | বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় | Read Online
বইয়ের আকর্ষণীয় কিছু খাদ্যের নামঃ
*মকাইয়ের ছাতু
*কলাইয়ের ছাতু
*গমের ছাতু
*বাথুয়া শাক
*চীনা ঘাসের দানা
*খেড়ীর দানা সিদ্ধ
*গুড়মী ফল
*হাতির কানের মতো পুরী
*পাকা শশার রায়তা
*কাঁচা তেতুলের ঝোল
*মহিষের দুধের দই
*পেঁড়া
*ভেলি গুড়
*রামদানার লাড্ডু
*লাল পিঁপড়ের ডিম
*পিষ্টক পিঠা
ডামাবানু-এক ধরনের জিনপরী
টাড়বারো-বুনো মহিষের দলের দেবতা
বইয়ের কিছু কথা যাহা আমাকে ভাবায়েছেঃ
*যে জিনিস যত দুষ্প্রাপ্য মানুষের মনের কাছে তাহার মূল্য তত বেশি। এ কথা খুবই সত্য যে, এই মূল্য মানুষের মনগড়া একটি কৃত্রিম মূল্য, প্রার্থিত জিনিসের সত্যকার উৎকর্ষ বা অপকর্ষের সঙ্গে এর কোনো সম্বন্ধ নাই।কিন্তু জগতের অধিকাংশ জিনিসের উপরই একটা কৃত্রিম মূল্য আরোপ করিয়াই তো আমরা তাকে বড় বা ছোট করি।
*Blessed are the meek for theirs is the kingdom of Heaven.
*বর্বর আর্য জাতি চার-পাঁচ হাজারের মধ্যে বেদ, উপনিষদ, পুরাণ কাব্য, জ্যোতির্বিদ্যা, জ্যামিতি, চরক-সুশ্রুত লিখিল, দেশ জয় করিল, সাম্রাজ্য পত্তন করিল, ভেনাস দ্য মিলোর মূর্তি, পার্থেনন, তাজমহল, কোলোঁ ক্যাথিড্রাল গড়িল, দরবারি কানাড়া ও ফিফথ্ সিম্ফোনির সৃষ্টি করিল-এরোপ্লেন, জাহাজ, রেলগাড়ি, বেতার, বিদ্যুৎ আবিষ্কার করিল-অথচ পাপুয়া, নিউগিনি, অস্ট্রেলিয়ার আদিম অধিবাসীরা আমাদের দেশের ওই মুন্ডা, কোল, নাগা, কুকিগণ যেখানে সেখানেই কেন রহিয়াছে এই পাঁচ হাজার বছর?
*কিন্তু ভানুমতির কাছে বসিয়া হাতে তুলিয়া খাওয়ানোর তুলনা হয় না! জীবনে সেদিন সর্বপ্রথম আমি অনুভব করিলাম নারীর নিঃসঙ্কোচ ব্যবহারের মাধুর্য। সে যখন স্নেহ করে, তখন সে কি স্বর্গের দ্বার খুলিয়া দেয় পৃথিবীতে!!
*মানুষ কি চায়-উন্নতি, না আনন্দ? উন্নতি করিয়া কি হইবে যদি তাহাতে আনন্দ না থাকে?
রিভিউ করেছেনঃ Munzeera Eshita
আরও পড়ুনঃ ভোকাবুলারি শেখার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী ১০টি উপায়