যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
পত্রগুচ্ছ সুকান্ত চমৎকার করে চিঠি লিখতে পারত। তার যত চিঠি এ পর্যন্ত উদ্ধার হয়েছে তার বেশির ভাগ লেখা ঘনিষ্ঠ বন্ধু অরুণাচল বসুকে উদ্দেশ করে। অরুণাচল বসুর মা সরলা বসু, যাকে সুকান্ত মা বলে ডাকতেন, তাঁর কাছেও লিখেছেন তিনি। পত্রের ছত্রে ছত্রে কমিউনিস্ট সুকান্ত আর কবি সুকান্ত আরও পরিস্ফুটিত। এগুলোতে ব্যক্তি জীবনের সরলতা দুর্বলতা আছে। আছে পার্টি-কর্মের তাগিদ এবং এক রুগ্ন কবির প্রচণ্ড ব্যস্ততা।
অভাবের কবি সুকান্ত। অভাবী মানুষের কবিতা লেখার জন্য তাঁকে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে হয়নি। কারণ তিনি নিজেই ছিলেন অভাবী। তাঁর লেখা চিঠিতেই ব্যক্ত হয়েছে সেকথা । ১৩৫৩ বাংলায় জ্যৈষ্ঠ মাসে বন্ধু অরুণকে লেখা চিঠির একাংশ উল্লেখ্য ।
“একান্ত অসহায় আমি?…কেবলই অনুভব করছি টাকার প্রয়োজন। শরীর ভাল করতে দরকার অর্থের । ঋণমুক্ত হতে দরকার অর্থের ৷ একখানা জামাও নেই, সে জন্যও যে বস্তুর প্রয়োজন তা হচ্ছে অর্থ। সুতরাং অভাবে কেবলই নিরর্থক মনে হচ্ছে জীবনটা।”
আরও পড়ুনঃ সুকান্ত ভট্টাচার্যের জীবনী | ১ম পর্ব | সম্পূর্ণ জীবন কাহিনী | Sukanta
সুকান্ত ছিলেন একান্তই নীচু তলার মানুষের কবি। অরুণাচল, সরলা বসু ছাড়া ভুপেনের কাছেও গুরুত্বপূর্ণ চিঠি লিখেছেন তিনি। ১৩৫১ সনের বসন্তের প্রথম দিনে মেজবৌদির কাছে লেখা চিঠিতে সুকান্ত নিজের সম্পর্কে লিখেছেন, তিনি নির্জনতার কবি নন । নির্জনতা তার ভাল লাগে না। তার ভাষায়- “আমি যে জনতার কবি হতে চাই, জনতা বাদ দিলে আমার চলবে কি করে? তাছাড়া কবির চেয়ে বড় কথা আমি কমিউনিস্ট। কমিউনিস্টের কাজ-কারবার সব জনতা নিয়েই ৷” মাছ যেমন পানি ছাড়া বাঁচতে পারে না তেমনি জনতা ছাড়া কমিউনিস্ট বাঁচে না । জনতাকে নিয়েই বাঁচতে হয় একজন কমিউনিস্টকে, সমাজ সচেতন কবিকে।
সুকান্তর সকল চিঠিপত্র সংগৃহীত হয়নি। যাও সংগৃহীত হয়েছে তারও অনেক কম সংখ্যকই আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এগুলো নিয়ে নাড়াচাড়া করলে সুকান্তকে অনেকখানি চেনা যায়, বুঝা যায়। আরও বেশি সংখ্যায় সংগৃহীত হলে তাঁকে আরও বেশি করে জানবার একটা উপায় হয়েও যেতে পারে। অবশ্য আমরা বলছি না যে, একমাত্র চিঠিপত্রের ভেতর দিয়েই একজনকে সম্যক উপলব্ধি করা যায়।
আরও পড়ুনঃ সুকান্ত সমগ্র | Sukanta Samagra PDF | সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা সমগ্র