যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
বইঃ পথের দাবী
লেখকঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়
পথের দাবী বিংশ শতাব্দীর একটি জনপ্রিয় ও সমালোচিত উপন্যাস, যা রচনা করেছিলেন বাঙ্গালী লেখক শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়। ব্রিটিশ শাসনামলে তাদের বিরুদ্ধেই কলম ধরার সাহস দেখিয়েছিলেন এই অপরজেয় কথাসাহিত্যিক। ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে এক অসাধারণ বিপ্লবী সব্যসাচী ও তার সাথীদের সংগ্রামের কাহিনী নিয়ে রচিত এই উপন্যাসটি ১৯২৬ সালের আগস্ট মাসে সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয়। তারপর রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে উপন্যাসটিকে নিষিদ্ধও করা হয়েছিলো কিন্তু পাঠকদের কাছে ঠিকই পৌঁছে গিয়েছিলো বিতর্কিত সেই বই।
আরও পড়ুনঃ হ্যামলেট শামসুর রাহমান | শেক্সপিয়ারের নাটকের বাংলা অনুবাদ PDF
গল্পের বিষয়বস্তু
পথের দাবী উপন্যাসের শুরু অপূর্বের রেঙ্গুন গমন থেকে। সেখানে থেকে পরিচয় ঘটে ভারতী নামের এক খ্রিষ্টান মেয়ের সাথে। যদিও ব্রাক্ষণপুত্র হওয়ায় ভারতীকে এড়িয়ে যেত অপূর্ব। কিন্তু নানা ঘটন-অঘটনের বেড়াজালে পড়ে একে অপরকে পছন্দ করে ফেলে। এতটুকু পর্যন্ত পড়ে যেকোন পাঠকে মনে হতে পারে নায়ক অপূর্ব, নায়িকা ভারতী। মনে হতে পারে, এ এক প্রেমের উপাখ্যান। উপন্যাসের মোড় ঘুরে যায় দৃশ্যপটে সব্যাসাচীর আগমনে। একজন বিপ্লবী। ভারতের স্বাধীনতাই যার একমাত্র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তাঁরই গড়ে তোলা সংগঠন “পথের দাবী”।
উপন্যাস জুড়েই আছে পথের দাবী সংগঠনের ও তার সদস্যদের কাজকর্ম। সব্যসাচীর আশ্চর্য জীবন, ভারতীর সরলতা, অপূর্বর ভীরুতা, সুমিত্রার কঠোরতা উপন্যাসটিকে নিয়ে গিয়েছে অনন্য উচ্চতায়। উপন্যাসটিতে শরৎচন্দ্রের আধুনিক মনোভাবের পরিচয় মেলে। তিনি নিজে ব্রাহ্মণ হয়েও উপন্যাসটিতে ব্রাহ্মণদের তীব্র সমালোচনা করেছেন। আমার পড়া সেরা একটি বই। সবাই পড়ে দেখতে পারেন।
আরও পড়ুনঃ মহেশ গল্প শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় PDF | রিভিউ Mahesh Story in Bengali
প্রথমে ধারাবাহিক ভাবে বঙ্গবাণী পত্রিকায় বের হত “পথের দাবী”। ১৯২৬ সালের ১১ ডিসেম্বর ব্রজেন্দ্রনাথ মিত্র পথের দাবী -কে দেশদ্রোহকর ও বাজেয়াপ্তযোগ্য বলে মতামত দেন। তারপর ১৯২৭ সালের ৪ জানুয়ারি প্রকাশিত গেজেটে পথের দাবী -কে নিষিদ্ধ করা হলে দেশ জুড়ে প্রতিবাদ ধ্বনিত হয়েছিল। নিষিদ্ধ করেও বাকরোধ করতে পারেনি তৎকালীন ব্রিটিশ প্রশাসন। পাঠকরা বইটিকে নানাভাবে পড়া শুরু করলো।
১৯৭৭ সালে “সব্যসাচী” নামে পীযুষ বসু পরিচালিত সিনেমাটি ছিলো জনপ্রিয় এই উপন্যাসের কাহিনী নিয়ে। চলচ্চিত্রটিতে নাম ভূমিকায় অভিনয় করেছিলেন উত্তম কুমার, সুপ্রিয়া দেবী, অনিল চ্যাটার্জী, তরুন কুমার প্রমুখ।
বলে রাখা ভাল, নতুন পাঠকদের জন্য এই বই উপযুক্ত না। কিছুটা পড়ে হয়তো রেখে দিতে বাধ্য হবে। তার কারণ- কাঠিন্য। কঠিন শব্দের কারণে না, কঠিন বাক্যের কারণে। এমন অসংখ্য বাক্য আছে যা বোঝার জন্য কয়েকবার পড়তে হয়েছে। উপন্যাসের শেষের দিকে লেখক যুক্তিতর্কের আসর বসিয়েছেন। যাদের যুক্তিতর্ক ভাল লাগেনা, তাদের জন্য বিরক্তিকর হতে পারে। তবে আমি মনে করি, এটা প্রত্যেক পাঠকের জন্য আবশ্যক একটি উপন্যাস।
আরও পড়ুনঃ চরিত্রহীন উপন্যাস শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় PDF | রিভিউ Choritrohin
আরও পড়ুনঃ পল্লীসমাজ উপন্যাস শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় PDF | রিভিউ Palli Samaj