Skip to content
Home » আরেক ফাল্গুন পিডিএফ জহির রায়হান উপন্যাস রিভিউ | PDF

আরেক ফাল্গুন পিডিএফ জহির রায়হান উপন্যাস রিভিউ | PDF

আরেক ফাল্গুন পিডিএফ জহির রায়হান উপন্যাস রিভিউ PDF

জহির রায়হান সম্পর্কে আফসোস করেনা এমন পাঠক খুব কমই আছে। এই নামটি শুনলেই আমার বুকের মাঝে একটা শূন্যতা কাজ করে। কেন জাতির সূর্য সন্তানগুলো এইভাবে হারিয়ে গেলো। সাহিত্য এবং চলচ্চিত্রের এই অমূল্য রত্নকে হারানো আমাকে খুব ব্যথিত করে। জহির রায়হানের সাথে পরিচয় সেই ক্লাস নাইনের “হাজার বছর ধরে” থেকে। তখন তো সাহিত্যের এতোকিছু বুঝতাম না বাট হাজার বছর ধরে এখনো বারবার পড়তে মন চায়। যতবার পড়ি মনে হয় এটা আমার নিজেরই গল্প। যাইহোক, আজ আলোচনা করবো “আরেক ফাল্গুন” নিয়ে। যে ফাল্গুনের সাথে আমাদের সম্পর্ক খুব নিবিড়।

আরেক ফাল্গুন একটি ভাষা আন্দোলন ভিত্তিক উপন্যাস। বিখ্যাত কথাশিল্পী, শহিদ বুদ্ধিজীবী ও চলচ্চিত্র পরিচালক মোহাম্মদ জহিরুল্লাহ্ (জহির রায়হান) ১৯৫৫ সালের ২১ শে ফেব্রুয়ারি পালনের বাস্তব অভিজ্ঞতার আলোকে এটি রচনা করেন। এই উপন্যাসে ১৯৪৮ সাল থেকে শুরু করে ১৯৫২ হয়ে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত চলমান আন্দোলন, জনতার সম্মিলন, ছাত্র-ছাত্রীদের প্রত্যক্ষ অংশগ্রহন, তাদের প্রেম-প্রণয় এবং ছেলে সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা, মায়ের অনুপস্থিতিতে সন্তানের মনের বেদনার কথা বর্ণিত হয়েছে।

উপন্যাসের উল্লেখযোগ্য মেয়ে চরিত্র গুলো হল:- বেনু, রানু, নীলা, সালমা, সাহানা, রোকেয়া এবং ডলি। ছেলে চরিত্র:- মুনিম, বজলে, সবুর, কবি রসুল, আসাদ, রাহাত, মতি ভাই, রওশন এবং ইন্সপেক্টর রশীদ। নায়ক মুনিম সহ আসাদ, রসুল এবং সালমা চরিত্রের মত অন্যান্য চরিত্র গুলোও ইতিহাস আনুমোদিত।

আরও পড়ুনঃ ডাক্তারদের হাতের লেখা খারাপ হয় কেন? প্রেসক্রিপশন বোঝার উপায় কি

১৯৫৫ সালের কথা বলা হয়েছে, যখন রক্তের মধ্যে উত্তেজনা বিদ্যমান। আকাশে বাতাসে ভাসছে সালাম-রফিক-বরকতের লাশের গন্ধ। ভাষার জন্য জীবন দেয়া শহিদদের আত্মত্যাগের মূল্যায়ন হয়নি তখনো। পশ্চিমারা বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসেবে স্বীকৃতি দিতে চায় না। তরুণ সমাজের সংগ্রামী চেতনাকে বেয়নেট দিয়ে দমিয়ে রাখার প্রচেষ্টা চলমান। কিন্তু ভাষা আন্দোলনের অগ্নিমন্ত্রে দীক্ষিত সেই তরুণ-তরুনীরা থেমে থাকেনি। পাট-শোলা, কাঠখড়ি দিয়ে তৈরি করে শহীদ মিনার। মাতৃভাষার জন্য জীবন দেয়া শহিদদের সম্মান বজায় রাখতে হবে প্রতিবার। সেই শহিদ মিনারকেও গুঁড়িয়ে দেয় স্বৈরাচারী শাসক গোষ্ঠী। তখন সংগ্রামী তরুণরা মাঠে নেমে আসে দলে দলে।

গল্পের শুরুর বর্ণনাটা অনেকটা এরকম, সাদা জামা সাদা প্যান্ট পরা যুবকটির খালি পা দুটি চলছে নিঃশব্দে। কিছুক্ষন পর আরও একজন খালি পায়ে বই হাতে যোগ দেয় তাঁর সাথে। একে একে হলো দশজন। তারপর বিশ, পঁচিশ, ত্রিশ, সবার পা খালি। এপ্রোন পরিহিত একটি মেয়ে যোগ দেয় মেডিকেলের সামনে থেকে। গলায় স্টেথোস্কোপ, হাতে বই, ডাক্তার হবে হয়তো, তারও পা খালি। সবার দাবি একটাই- ভাষা শহীদদের সম্মান জানাতে হবে। রাষ্ট্রভাষাকে অবশ্যই বাংলা করতে হবে, এটা তাঁদের মায়ের ভাষা। রাজপথে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন ও প্রতিবাদ চলে দাবি আদায়ের জন্য। তাঁদের মাঝে নেই কোন হিংস্রতা, অশান্তি, বিশৃঙ্খলা। আছে শুধু নিঃশব্দ আকুতি এবং রাজপথ না ছাড়ার দৃঢ় প্রত্যয়।

আরও পড়ুনঃ দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণ নাটক PDF রিভিউ | প্রেক্ষাপট | পটভূমি | আলোচনা

বইটির শেষের দিকে দারুন একটা দৃশ্যপট আছে, যেখানে শত শত তরুণ-তরুণীকে জেলে ঢোকানো হচ্ছে। এটা দেখে জেলার বিরক্ত হয়ে ওঠে। তখন তাদের মধ্যে থেকে একজন বলে ওঠে, “এতেই ঘাবড়ে গেলেন নাকি? আসছে ফাল্গুন আমরা কিন্তু দ্বিগুন হবো”। এ থেকে বুঝা যায় ফাল্গুনের পর ফাল্গুন যেন ভরে উঠবে পুলিশ স্টেশন, দাবি ঠিক একটাই-অস্তিত্বের দাবি।

আপনি যদি জহির রায়হান প্রেমী হয়ে থাকেন আর উপন্যাসটি এখনো পড়া না হয়ে থাকে তাহলে আর দেরি না করে শুরু করে দিন। নিচে পিডিএফ ফাইল এটাচ করা আছে এখান থেকেই পড়ে নিতে পারেন অথবা ডাউনলোড করে রাখতে পারেন। ধন্যবাদ আপনাকে। বইয়ের পাঠশালার পাশেই থাকুন।

আরও পড়ুনঃ পুতুল নাচের ইতিকথা রিভিউ PDF | মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় উপন্যাস সমালোচনা

Tags:
x
error: Content is protected !!