Skip to content
Home » ঘুম নেই PDF | সুকান্ত ভট্টাচার্য কবিতা | Ghum Nei by Sukanta

ঘুম নেই PDF | সুকান্ত ভট্টাচার্য কবিতা | Ghum Nei by Sukanta

ঘুম নেই সুকান্ত ভট্টাচার্য গল্প কবিতা রচনা সমগ্র pdf

যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

ঘুম নেই সুকান্তর কবিতায় নতুন যুগের স্বাদ পাওয়া যায়, মেলে একটা নতুন সুর। সে সুরের প্রভাবে একটা মানুষ পাাল্ট যেতে পারে। ‘ঘুম নেই’র কবিতাগুলো চমৎকার! শব্দে, উপমায়, ছন্দে ও সঙ্গীতে একেবারে আধুনিক ।

‘বিক্ষোভ’ ‘ঘুম নেই’র প্রথম কবিতা এবং একটি অন্যতম কবিতা। ‘দৃঢ় সত্যের দিতে হবে খাঁটি দাম’—এ কথা দিয়ে কবিতাটির শুরু। এ রকম স্পষ্ট কথা বলাই একজন সংগঠকের কাজ। একজন সংগঠক দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগতে পারে না। সুকান্ত তো নয়ই। কারণ সুকান্ত নতুন যুগের সংগঠক এবং কবি ।

দেব, প্রাণ দেব মুক্তির কোলাহলে,/জীন ডার্ক, যীশু, সোক্রাটিসের দলে।/কুয়াশা কাটছে, কাটবে আজি কি কাল,/ধুয়ে ধুয়ে যাবে কুৎসার জঞ্জাল,/ততদিন প্রাণ দেব শত্রুর হাতে,/মুক্তির ফুল ফুট সে সংঘাতে।/ইতিহাস! নেই অমরত্বের লোভ,/আজ রেখে যাই আজকের বিক্ষোভ।

Download Now

আরও পড়ুনঃ হরতাল PDF | সুকান্ত ভট্টাচার্য কবিতা রিভিউ | Hartal by Sukanta

“১লা মে’র কবিতা ‘৪৬’-এরও একই সুর, মেজাজের ছোঁয়া। উচ্ছিষ্ট হাড় খেয়ে কুকুরের মত বেঁচে থাকার কোন মানে হয় না। মানে হয় না পেটের ক্ষুধায় গলার শিকলকে ভুলে থেকে লেজ নাড়ার! তাই সুকান্ত পোষ মানা আর বশ্যতাকে অস্বীকার করতে বলেছেন। বলেছেন বিদ্রোহ করতে।

“চলো, শুকনো হাড়ের বদলে/সন্ধান করি তাজা রক্তের, / তৈরি হোক লাল আগুনে ঝলসানো আমাদের খাদ্য।/শিকলের দাগ ঢেকে দিয়ে গজিয়ে উঠুক/সিংহের কেশর প্রত্যেকের ঘাড়ে।”

Download Now

‘পরিখা’ কবিতায়ও আশাবাদী সুকান্তর মনোবভার সুস্পষ্ট। তিনি কবিতাটির একেবারে শেষাংশে লিখেছেন,

“পৃথিবী এখনো নির্জন নয়, জ্বলন্ত ধূপ।
সহস্র প্রাণ বসে আছে ঘিরে অস্ত্র হাতে ॥”

মানুষের ইতিহাসে আন্দোলন অনেক হয়েছে। কিন্তু সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব সমাজ জীবনের বুনিয়াদকে যতটা গভীরভাবে প্রভাবিত করেছে অন্য কোন বিপ্লব তা করতে পারেনি। সমাজতান্ত্রিক বিপ্লব হল মানবজাতির সমগ্র ইতিহাসে এক প্রগাঢ়তম এবং কার্যকরী বিপ্লব।

আরও পড়ুনঃ ছাড়পত্র কাব্যগ্রন্থ PDF রিভিউ | সুকান্ত ভট্টাচার্য | Charpotro | Sukanta

এই বিপ্লবের জন্য চাই সংগঠন, আদর্শ, সুযোগ্য নেতৃত্ব আর সুশিক্ষিত ক্যাডার। সুকান্ত ছিলেন সেই বিপ্লবী ক্যাডার। তাই তিনি বিপ্লবের গান পরিবেশন করে গেছেন অত্যন্ত সচেতনতার সাথে। ১০০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপে পানি বাষ্পে রূপান্তরিত হয়, তার কমে নয়। সুকান্ত এ কথাটি ভাল করে জানতেন বলেই বলতে পেরেছেন।

Download Now

“বেজে উঠল কি সময়ের ঘড়ি?
এস তবে আজ বিদ্রোহ করি,”

সমাজতন্ত্রের সৈনিকদের প্রহরী তাঁরা নিজেরাই। তাদের কোন প্রহরীর প্রয়োজন নেই। তাঁরা ঝড়-তুফানে পথ চলতে জানে। তাঁরা কোন বাধাকেই পরোয়া করে না। তাঁদের গতিরোধ করার সাধ্যও কারো নেই। খ্যাতির মুখে পদাঘাত হানতে তাঁদের জুড়ি নেই। গোলামীর দলিলকে, তথাকথিত কুসংস্কারকে তাঁরা টুকরা টুকরা করে ছিড়ে ফেলার প্রত্যাশী। তারপর তাদের কথা হল,

“দেখবো ওপরে আজো আছে কারা,/খসাব আঘাতে আকাশের তারা,/সাড়া দুনিয়াকে দেব শেষ নাড়া,/ছড়াব ধান।/ জানি রক্তের পিছনে ডাকবে সুখের বান।”
এ সকল বক্তব্যে সুকান্ত পুঁজিবাদের সমাপ্তি রেখা টানার ঘোষণা করেছেন। ঘোষণা করেছেন শেষ যুদ্ধের ।

আরও পড়ুনঃ গীতিগুচ্ছ PDF | সুকান্ত ভট্টাচার্য | বই রিভিউ | Geetiguccho by Sukanta

কবি অনন্যোপায় হয়েই ভাঙার স্বপ্ন দেখেন। দেখেন ভাঙার মধ্যে নতুন সমাজের নব উত্থান। অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার প্রয়োজনে, রুটি-রুজির সংগ্রামে বার বার ব্যর্থ হলেই বিদ্রোহের আশ্রয় নিতে হয়। অন্যায়ের দণ্ডকে চিরতরে বিদায় জানাতে বিদ্রোহ ছাড়া, ধ্বংস ছাড়া আর কোন বিকল্প পথ নেই। আর এ জন্যই পৃথিবী আজ দোদুল্যমান। পৃথিবীকে আজ ঢেলে সাজাতে হবে এক নতুন কাঠামোতে। জনতার মুখে তারই বিদ্যুত্বাণী শোনা যায়। এখন বসে থাকার সময় নয়, কাজের সময়। প্রতিশোধ নেবার মোক্ষম সময়। অগ্নিযুগের বিপ্লবীদের লব্ধ অভিজ্ঞতার আলোকে এগিয়ে যাবার সময়। ‘জনতার মুখে ফোটে বিদ্যুৎত্বাণী’ কবিতায় তাই সুকান্তর আহ্বান-
“মহাজন ওরা, আমরা ওদের চিনি!/হে খাতক নির্বোধ,/ রক্ত দিয়েই সব ঋণ কর শোধ!”

Download Now

এখানে বিদ্রোহী কবি কাজী নজরুল ইসলামের কবিতার উদ্ধৃতিও প্রণিধানযোগ্য, “জনগণের যারা জোঁক সম শোষে তারে মহাজন কর/সন্তান সম যারা পালে জমি তারা জমিদার নয়।” আর এজন্য তিনিও রক্তারক্তির কথা বলেন, “চাই না ধর্ম, চাই না কাম/চাই না মোক্ষ, সব হারাম/ আমাদের কাছে; শুধু হালাল/ দুশমন খুন লালসে লাল।’

বিপ্লবীর মৃত্যু নেই, ক্ষয় নেই, ধ্বংসও নেই। এমনকি রক্ত দানেরও কোন ভয় নেই। দেশকে এবং দেশের মানুষকে ভালবেসে এরা মৃত্যুকে ভুলে যেতে পারে। আর লড়াই করতে করতে মরে বলেই এঁরা ‘ভ্যানগার্ড’, সচেতন অগ্রণী সৈনিক। সকল দেশের সকল যুগের বিপ্লবীরা এক সূত্রে গাঁথা। এঁরা এক ও অভিন্ন। জন্মস্থান, বংশ, ধন-মান, ভাষা—এক কথায় কোন কিছুই প্রকৃত বিপ্লবীদের মধ্যে কোন পৃথক রেখা টানতে পারে না। তাঁদের অনুভূতি সর্বত্রই এক ও অভিন্ন। ‘মুক্তবীরদের প্রতি’ কবিতায় সুকান্তর উচ্চারণ-

“তোমরা রয়েছ, আমরা রয়েছি, দুর্জয় দুর্বার,/পদাঘাতে পদাঘাতেই ভাঙব মুক্তির শেষ দ্বার ।/আবার জ্বালাব বাতি,/হাজার সেলাম তাই নাও আজ, শেষ যুদ্ধের সাথী ।”

আরও পড়ুনঃ সুকান্ত সমগ্র | Sukanta Samagra PDF | সুকান্ত ভট্টাচার্যের কবিতা সমগ্র

‘প্রিয়তমাষু’ সুকান্তর একটি দীর্ঘ ও সার্থক কবিতা। এর প্রতিটি স্তবকে জাতীয় ও আন্তর্জাতিকতার সুর বিদ্যমান। একজন বিপ্লবী প্রথমে জাতীয়, পরে আন্তর্জাতিক। সে যুদ্ধ করে নিজের দেশের ও জগতের সকল লাঞ্ছিত মানুষের জন্য। গেরিলারা যেমন ‘undying force’ তেমনি একজন সাচ্চা বিপ্লবীরও মৃত্যু নেই, পরাজয় নেই; আছে জয়ের দম্ভ। এ দাম্ভিক মনটাও যুদ্ধ শেষে আন্তর্জাতিকতার পাশাপাশি নিজের প্রিয়তমার কথা ভাবে। দূর দেশে যুদ্ধ করতে করতে পিছে ফেরে যাওয়া অভাবী ভিটের কথা ভাবে। তাই হয়তো এক সময় বলে বসে-

“আর সামনে নয়,
এবার পেছন ফেরার পালা।
পরের জন্যে যুদ্ধ করেছি অনেক,
এবার যুদ্ধ তোমার আর আমার জন্যে।”

কিন্তু বড় কথা হল, যার বাইরের দিকটা বড়, তার ভেতরের দিকটা তত বড় থাকে না। সারাবিশ্বে যাঁর ঘর, জন্ম ভিটায় তার ঘর না থাকলে তেমন কিছুই আসে যায় না। ‘প্রিয়তমাষু’ কবিতার শেষ কয়টি লাইনে তাই হয়তো সুকান্ত লিখতে পেরেছেন,
“আমি যেন সেই বাতিওয়ালা/যে সন্ধ্যায় রাজপথে-পথে বাতি জ্বালিয়ে ফেরে/অথচ নিজের ঘরে নেই যার বাতি জ্বালার সামর্থ্য,/নিজের ঘরেই জমে থাকে দুঃসহ অন্ধকার ।”

Download Now

আরও পড়ুনঃ পূর্বাভাস কাব্যগ্রন্থ PDF | সুকান্ত ভট্টাচার্য | Purbavas by Sukanta

সমাজতন্ত্রের মিত্ররা, সমাজতন্ত্রের সৈনিকরা অথবা যাদের প্রয়োজনে সমাজতন্ত্র- তারা এক না হলেও সমাজতন্ত্রের শত্রুরা এক। দেশের হৃদযন্ত্রে এরা ছুরি চালায়। এরা সমাজতন্ত্রের নামে সমাজতন্ত্রকে ফাঁকি দেয়। হয়তো এজন্য ‘’সূচনা’ কবিতায় সুকান্তর কণ্ঠে ধ্বনিত হয়-

“কত বসন্ত গিয়েছে অহল্যা গো,
জীবনে ব্যর্থ তুমি তবু বার বার,
দ্বারে বসন্ত, একবার শুধু জাগো
দুহাতে সরাও পাষাণের গুরুভার।”

কবে মুক্তির প্রতিক্ষিত সে শুভক্ষণ দেখা দেবে! শত্রুকে আর ক্ষমা নয়। এরাতো কাউকে ক্ষমা করেনি । ক্ষমা করেনি বিধ্বস্ত বাংলাকে । তাই বাংলার মাটি আজ ক্ষিপ্ত।

এ দেশের কৃষক মজুর জনরাজ্যের মুক্তির সন্ধানী। দাসত্বের ধুলো ঝেড়ে ফেলতে এরা সক্ষম । মুক্তি সেনানীরা এ মাটিতে বৈশাখের ঘোষণা করে আসছে। মৃত্যুকেও এরা নিহত করতে জানে। ওদের পায়ের স্পর্শে আজ অসহায় আবেগে পৃথিবী ও ইতিহাস কাঁপছে। ওদের আদর্শই সুকান্তর আদর্শ।
“ওদের দুচোখে আজ বিকশিত আশার কামনা,/ অভিনন্দন আছে, পথের দুপাশে অভ্যর্থনা।”

Download Now

আরও পড়ুনঃ মিঠেকড়া PDF | রিভিউ | সুকান্ত ভট্টাচার্য | Mithekora by Sukanta

পৃথিবীর অনেক দেশে সমাজতন্ত্রের দোলা লেগেছে। এ দেশেও এর জন্য মানুষ লড়ছে, মরছে ৷ বন্যা, মৃত্যু যুদ্ধ বা মন্বন্তর, কিছুই তাদের ফেরাতে পারছে না। এরা পিছু হটতে জানে না। কিন্তু এদের চেতনার স্তর আর সাধারণ মানুষের চেতনার স্তর এক নয়। সাধারণ মানুষকে জাগাতে হয়। তাই ‘কবে’ কবিতায় সুকান্ত বলেন,

“সারা পৃথিবীর দুয়ারে মুক্তি, এখানে অন্ধকার,
এখানে কখন আসন্ন হবে বৈতরণীর পার?”

কবিতার স্নিগ্ধতার প্রয়োজন না থাকলেও ভাষা আমাদের প্রয়োজন। প্রয়োজন আর একবার রবীন্দ্রনাথের । সারা পৃথিবীকে মৈত্রির বাণী পাঠাতে হবে। পীড়নের প্রতিবাদে উচ্চারিত ‘কথা’ চাই তাই । “পঁচিশে বৈশাখের উদ্দেশ্যে” কবিতায় কবির প্রার্থনা হল-

“আমার প্রার্থনা শোনো পঁচিশে বৈশাখ,
আরও একবার জন্ম দাও রবীন্দ্রনাথের ।


কবির দৃঢ় বিশ্বাস,


“তাঁর জন্ম অনিবার্য, তাকে ফিরে পাবই আবার।”

সুকান্তর প্রত্যাশা,

“এবারে নতুনরূপে দেখা দিক রবীন্দ্রঠাকুর
বিপ্লবের স্বপ্ন চোখে, কণ্ঠে গণসংগীতের সুর;”

কবির দূরদৃষ্টি-
“জনতার পাশে পাশে উজ্জ্বল পতাকা নিয়ে হাতে/চলুক নিন্দাকে ঠেলে, গ্লানি মুছে আঘাতে আঘাতে।/যদিও সে আনাগত, তবু যেন শুনি তার ডাক/আমাদেরই-মাঝে জন্ম দাও পঁচিশে বৈশাখ।”

আহার, নিদ্রা, ঘুম, অঙ্গ-সঞ্চালন, নিঃশ্বাস প্রশ্বাস, অভিজ্ঞতা ও বিশ্বাসের সর্বাংশ নিয়ে কবিতায় সুকান্ত আমাদের সামনে উপস্থিত। সে নেই এমন কথা ভাবার আর কোন উপায় নেই । বড় কথা হল সুকান্তর কবিতায় প্রয়োজনের তাগিদ আছে। কর্তব্যের ডাক আছে, আছে অন্তরঙ্গতা। জনতার কবি জনতার ঐক্যের মধ্যেই মুক্তি দেখতে পান।

আরও পড়ুনঃ সুকান্ত ভট্টাচার্যের জীবনী | ১ম পর্ব | সম্পূর্ণ জীবন কাহিনী | Sukanta

Download Now
Tags:
x
error: Content is protected !!