যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
বই: শেষের কবিতা
লেখক: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর
প্রকাশনী: প্রান্ত প্রকাশন
প্রকাশকাল: ১৯২৮
ধরণ: রোমান্টিক, কাব্যধর্মী উপন্যাস
ব্যক্তিগত রেটিং: ৮/১০
রিভিউ করেছেনঃ Halima Akter Tanny
সূচনা আখ্যান:
“ভালোবাসা ভালোবাসে শুধুই তাকে, ভালোবেসে ভালোবাসায় বেঁধে যে রাখে।” এই চরণটির সাথে অনেকেই হয়তো সহমত পোষণ করবেন আবার কেউ কেউ দ্বিমত পোষণ করবেন কারণ এই বেঁধে রাখার ব্যাপারটিতে অনেকে অভ্যস্ত নন। কেউ কেউ ভালোবাসাকে মুক্ত বিহঙ্গের মত আকাশে ডানা মেলতে দেন। আবার কেউ কেউ ভালোবাসার মানুষটিকে বেঁধে রাখতে চান।
মুক্ত বিহঙ্গের মত ছেড়ে দিলে যদি সে হারিয়ে যায়! এই ভয়ে ভালোবাসার মানুষটিকে আগলে রাখতে চান। কোন পক্ষ ঠিক, কোন পক্ষ বেঠিক সে আলোচনা না করাই শ্রেয় কারণ এতে হয়ত কূলকিনারা মিলবে না৷ ভালোবাসা ব্যাপারটি যেমন মনস্তাত্ত্বিক জটিল ব্যাপার যাকে কোনো সংজ্ঞায় সংজ্ঞায়িত করা যায় না ঠিক তেমনি ভালোবাসার প্রকাশেরও রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন রূপ।
ভালোবাসলে দুটো ভিন্ন পরিবেশ থেকে আসা, ভিন্ন মত, ভিন্ন রুচির মানুষও তাদের পার্থক্য ভুলে একসঙ্গে থাকতে পারে। আবার কখনো কখনো তীব্র ভালোবাসাই তাদের আলাদা হয়ে যাওয়ার কারণ হয়। ভালোবাসার এক অনন্য প্রকাশের চিত্রই কখনো কখনো বইয়ে উঠে আসে। আপাতদৃষ্টিতে যা খুব সাধারণ মনে হয় কিন্তু লেখকের লেখনীর জাদুতে সেটি এক অনন্তযৌবনা রূপ পায়। “শেষের কবিতা”তেও এমনি এক ভালোবাসার চিত্র ফুটে উঠেছে।
আরও পড়ুনঃ গল্পগুচ্ছ Read Online | রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর | Golpo Guccho PDF
কাহিনিসংক্ষেপ:
শেষের কবিতা বিংশ শতকের বাংলার নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের জীবনকথা। এই অভিজাত সমাজের চাল-চলন, কথাবার্তায়, বেশভূষায় রয়েছে বিলেতের ছোঁয়া। “ফ্যাশনের পসরায় আপাদমস্তক যত্নে মোড়ক-করা পয়লা নম্বরের প্যাকেট-বিশেষ। উঁচু খুড়ওয়ালা জুতো, লেসওয়ালা বুক-কাটা জ্যাকেটের ফাঁকে প্রবালে অ্যাম্বারে মেশানো মালা, শাড়িটা গায়ে তির্যকভঙ্গিতে আঁট করে ল্যাপটানো। এরা খুট খুট করে দ্রুত লয়ে চলে; উচ্চৈঃস্বরে বলে; স্তরে স্তরে তোলে সূক্ষ্মাগ্র হাসি; মুখ ঈষৎ বেঁকিয়ে স্মিতহাস্যে উঁচু কটাক্ষে চায়, জানে কাকে বলে ভাবগর্ভ চাউনি; গোলাপি রেশমের পাখা ক্ষণে ক্ষণে গালের কাছে ফুর ফুর করে সঞ্চালন করে, এবং পুরুষবন্ধুর চৌকির হাতার উপরে বসে সেই পাখার আঘাতে তাদের কৃত্রিম স্পর্ধার প্রতি কৃত্রিম তর্জন প্রকাশ করে থাকে”
লেখকের এরকম কিছু লাইন দ্বারা তৎকালীন নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের পরিচয় পাওয়া যায়। এই নবশিক্ষিত অভিজাত সমাজের একটি গ্রুপ বা দল আছে। তারা শিল্প, সাহিত্য,কাব্য এসব নিয়ে আলোচনা করে। কখনো কখনো তর্ক বির্তকও হয়। আর সেই বিতর্ক হয় মূলত ধনীর দুলাল বিলেত ফেরত ব্যারিস্টার অমিত রায়ের সঙ্গে।
অমিত রায়ের বেশভূষা, রুচি আর পাঁচজনের চেয়ে আলাদা। সে সুদর্শন, প্রখর বুদ্ধিদীপ্তও বটে। একারণে অমিতের আশেপাশে অগণিত সুন্দরী রমণীদের আনাগোনা। অমিত তাদের কাছে বহু আকাঙ্ক্ষিত যুবাপুরুষ। অমিত তাদের প্রতি উদাসীনও নয় আবার বিশেষ কারো প্রতি তার আসক্তিও নেই। অমিতের প্রিয় লেখক নিবারণ চক্রবর্তী। এই লেখকের লেখা নিয়ে সে প্রথিতযশা সব লেখক, কবিদের লেখাকে তুচ্ছজ্ঞান করে, তর্ক করে।
আরও পড়ুনঃ কপালকুণ্ডলা বাংলা বই রিভিউ উপন্যাসের সারাংশ | Kapalkundala PDF
স্রোতের বিপরীতে চলা স্বভাব অমিত রায় শিলং পাহাড়ে ছুটি কাটাতে যায়। সেখানে এক মোটর দুর্ঘটনায় লাবণ্যের সাথে দেখা হয়। লাবণ্য পশ্চিমি কলেজের অধ্যক্ষ অবনীশ দত্তের একমাত্র মেয়ে। মাতৃহীন লাবণ্যকে তিনি শৈশব থেকেই পাঠানুরাগী হিসেবে গড়ে তুলেছেন। প্রাপ্তবয়সে পদার্পণ করার পর নানা ঘটনাক্রমে বাপের সাথে মান অভিমানের এক পর্যায়ে লাবণ্য সিদ্ধান্ত নেয় যে, সে বাপের আবার বিয়ে দেবে এবং পৈতৃক সম্পত্তি কিছুই নেবে না। স্বাধীন উপার্জন করবে এবং সেই মোতাবেকই সে চলছিল।
লাবণ্য অমিতের দেখা মেয়েদের চেয়ে আলাদা। স্নিগ্ধ, বিদূষী লাবণ্যের দেখা পেয়ে অমিতের চিরাচরিত জগৎ যেন ওলটপালট হয়ে যায়। সে যেন নতুন কোনো রহস্যের সন্ধান পেয়ে গেছে যে রহস্য হলো লাবণ্য এবং সেই রহস্যের সমাধানে সে প্রতিনিয়ত কৌতূহলী হয়ে ওঠে। লাবণ্যও একসময় অমিতকে ভালোবেসে ফেলে। চিন্তাভাবনা, রুচিতে প্রচুর ব্যবধান থাকা সত্ত্বেও একসময় অমিত আর লাবণ্য বিয়ে করবে বলে ঠিক করে।
তবে মানুষ ভাবে এক আর হয় তার উল্টো। মানুষের মনের চেয়ে রহস্যময় বোধ হয় পৃথিবীতে আর কিছু নেই।একসময় সব এলোমেলো হয়ে যায়। যারা এই চিরায়ত উপন্যাস পড়েছেন তারা তো জানেনই কেন সবকিছু ভেস্তে যায়। যারা পড়েননি তারা কেন এর উত্তর পেতে শীঘ্রই পড়ে ফেলুন এই উপন্যাস।
আরও পড়ুনঃ বউ ঠাকুরানীর হাট রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর PDF | রিভিউ | Bou Thakuranir Haat
চরিত্র পর্যালোচনা:
এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র অমিত আর লাবণ্য। এছাড়া আরো কিছু উল্লেখযোগ্য পার্শ্ব চরিত্রের সমাবেশ ঘটেছে যেটি উপন্যাসটিকে পূর্ণতা দান করেছে। চরিত্রগুলো সম্বন্ধে আলোচনা করা যাক-
অমিত: এ উপন্যাসের নায়ক। সুদর্শন, প্রখর বুদ্ধিদীপ্ত, কথার পিঠে কথা বলায় পটু অমিত। স্রোতের বিপরীতে চলা তার স্বভাব। আমার কাছে মনে হয়েছে অমিত যেন ইচ্ছে করেই সবার আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হতে চায়। অমিত কিছুটা বাঁচালও বটে। কোথাও কোথাও অমিতের আচরণের মাঝে অহংবোধ ভাবটা ধরা পড়েছে। অমিত চঞ্চল প্রকৃতির। সে আসলে কী চায় এটা স্পষ্ট নয়। “আমি মনে মনে যে মেয়ের ব্যর্থ প্রত্যাশায় ঘটকালি করি সে গরঠিকানা মেয়ে। প্রায়ই সে ঘর পর্যন্ত এসে পৌঁছায় না। সে আকাশ থেকে পড়ন্ত তারা, হৃদয়ের বায়ুমণ্ডল ছুঁতে না ছুঁতেই জ্বলে ওঠে, বাতাসে যায় মিলিয়ে, বাস্তুঘরের মাটি পর্যন্ত আসা ঘটেই ওঠে না” এই উক্তির দ্বারাই অমিতের চরিত্র স্পষ্ট হয়ে ওঠে।
লাবণ্য: অমিত যেমন চঞ্চল ঝর্ণা, লাবণ্য তার পুরোই বিপরীত। উপন্যাসের নায়িকা লাবণ্য যেন শান্ত দিঘি। সাদাসিধে, বিদূষী লাবণ্য যেন ভোরের আলোর মতই স্নিগ্ধ। কবিগুরুর ভাষ্যমতে, “ফ্যাশানটা হল মুখোশ, স্টাইলটা হল মুখশ্রী।” লাবণ্য যেন সেই স্টাইল বা মুখশ্রী। লাবণ্য একইসাথে আবেগী এবং বাস্তববাদী। এছাড়া তার মধ্যে আত্মসম্মান ও আত্মমর্যাদাবোধও প্রবল।
কেতকী/কেটি: অমিতকে প্রচন্ড ভালোবাসে। অমিতের ভালোবাসা পাওয়া ও তাকে ধরে রাখার জন্যই হোক বা অভিজাত সমাজের লোকজনদের সাথে ওঠাবসার জন্যই হোক সে কৃত্রিম মুখোশ পড়ে থাকে। বিলেতি ঢং-এ নিজেকে সাজায় এবং তার কথাবার্তা, চালচলনেও বিলেতি ভাব স্পষ্ট।
আরও পড়ুনঃ আদর্শ হিন্দু হোটেল PDF রিভিউ | বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় | Read Online
শোভনলাল: লাবণ্যের বাবার স্নেহধন্য শোভনলাল গরিবের ছেলে তবে লেখাপড়ায় লাবণ্যকে টক্কর দেয়।এইকারণে লাবণ্য শোভনলালের প্রতি কিঞ্চিৎ ঈর্ষাপরায়ণ। শোভনলাল লাবণ্যকে গোপনে ভালোবাসে। তার ভালোবাসা প্রকাশ অত্যন্ত সরল। তাতে অমিতের মত জটিলতা নেই।
যোগমায়া: যদি আমাকে জিজ্ঞেস করা হয় শেষের কবিতায় কোন চরিত্রটি ভালো লেগেছে তাহলে লাবণ্যের পর আমার যোগমায়া চরিত্রটি ভালো লেগেছে। ঊনিশ শতকীয় জীবন ঐতিহ্যের নিশ্চিত দিশারী সে। যোগমায়া লাবণ্যের ছাত্রী সুরমার মা। চল্লিশের কাছাকাছি বয়স হলেও বয়স যেন তাকে গম্ভীর শুভ্রতা দিয়েছে। গৌরবর্ণ, বৈধব্যরীতিতে চুল ছাঁটা, মাতৃভাবে পূর্ণ প্রসন্ন চোখ, স্নিগ্ধ হাসির অধিকারী যোগমায়া একইসাথে লাবণ্যের প্রতি প্রচন্ড স্নেহপরায়ণ এবং তার মতামতকে গুরুত্ব দেয়।
অবনীশ দত্ত: এই উপন্যাসের সবচেয়ে ব্যতিক্রমী চরিত্র এবং একইসাথে এত আধুনিক চিন্তাভাবনার অধিকারী হওয়ার জন্য অবনীশ দত্ত চরিত্রটি বিশেষভাবে ভালোলাগা তৈরি করেছে। অবনীশ দত্ত পেশায় কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি লাবণ্যের বাবা। তবে অন্যান্য সব বাবাদের সাথে তার পার্থক্য এই চরণে স্পষ্ট হয়- “লাবণ্যের নাই বা হল বিয়ে, পান্ডিত্যের সঙ্গেই চিরদিন নয় গাঁঠবাঁধা হয়ে থাকল।”
আরও পড়ুনঃ ঠগী শ্রীপান্থ PDF | বই রিভিউ | কাহিনী | Thagi Sripantha Books PDF
পাঠ প্রতিক্রিয়া:
এই চিরায়ত উপন্যাস যে শুধুই প্রেমের তা কিন্তু নয় এটি একইসাথে কাব্যধর্মী উপন্যাস। এ উপন্যাসের প্রত্যেক পরতে পরতে রয়েছে কবিতার ছড়াছড়ি। অবশ্য হবেই বা না কেন নামকরণ থেকেই তো আঁচ করা যায় তবে অধিকাংশ মানুষ এখনো এই নামকরণের কারণে এটিকে কাব্য বলে ভুল করেন।
তবে নিঃসন্দেহে বলা যায় যে, কাব্যই এই উপন্যাসের প্রাণ। চরিত্রগুলোর সংলাপ যে কতটা অসাধারণ তা না পড়লে বোঝা যাবে না। বিশেষত অমিত আর লাবণ্যের মধ্যকার কথোপকথনে যে কাব্যিকতার, ছন্দের সূচনা হয় সেটা দারুণ। দুজন প্রচন্ড বুদ্ধিসম্পন্ন, শিল্প সাহিত্য জানা মানুষের মধ্যকার কথোপকথন এরকম মজাদারই হয় হয়তো।
একইসাথে আমার এ উপন্যাসটিকে মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস মনে হয়েছে। অর্থাৎ প্রচুর মনোযোগ দিয়ে এটি পড়তে হবে। একটু মনোযোগ এদিক ওদিক হলেই আপনি কিছুই বুঝবেন না। এটা পড়তে যেয়ে আপনার অন্যান্য কবি, তাদের লেখনীর সাথেও পরিচয় হবে। প্রেম ব্যতিরেকে এই উপন্যাসে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে চিন্তাভাবনার যে ব্যবধান ঘটে সেটিও উঠে এসেছে।
অমিত চরিত্রটি ব্যক্তিগতভাবে আমার অতটা ভালো লাগেনি কারণ তার মন স্থির নয়। সে একইসাথে ঘড়ায় তোলা জল আর দিঘি দুটোকেই চায়। দু’নৌকোয় পা দিয়ে কি আসলে চলা যায়? প্রেম, বিচ্ছেদ, বাস্তবতা, সংসার এসব সম্বন্ধে বহু জ্ঞানগর্ভ আলোচনাও উঠে এসেছে।
কোথাও কোথাও মনে হয়েছে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ এখানে নিবারণ চক্রবর্তীর সাথে নিজের তুলনা টেনে নিজের মাহাত্ম্য প্রকাশ করেছেন অমিতের জবানিতে। নামের মতই এই উপন্যাস নিয়ে কথা বলা শেষ হবে না শেষ এইটুকু বলতে চাই ইংরেজ কবি ডনের বিখ্যাত সেই লাইনের বাংলা অনুবাদও যে এতটা সুন্দর শোনাবে এটা না পড়লে জানাই হত না। “দোহাই তোদের, একটুকু চুপ কর। ভালোবাসিবারে দে আমারে অবসর।”
আরও পড়ুনঃ বিষবৃক্ষ উপন্যাসের সারাংশ বিষয়বস্তু চরিত্র | Bishabriksha Novel PDF
ভালোলাগা কিছু উক্তি:
পুরুষ আধিপত্য ছেড়ে দিলেই মেয়ে আধিপত্য শুরু করবে। দুর্বলের আধিপত্য অতি ভয়ংকর।
মেনে নেওয়া আর মনে নেওয়া, এই দুইয়ের তফাৎ আছে।
যা আমার ভাল লাগে তাই আর একজনের ভাল লাগে না, এই নিয়েই পৃথিবীতে যত রক্তপাত।
পড়ার সময় যারা ছুটি নিতে জানে না তারা পড়ে, পড়া হজম করে না।
ভালোবাসায় ট্রাজেডি সেখানেই ঘটে যেখানে পরস্পরকে স্বতন্ত্র জেনে মানুষ সন্তুষ্ট থাকতে পারে নি – নিজের ইচ্ছা অন্যের ইচ্ছে করবার জন্যে যেখানে জুলুম – যেখানে মনের করি, আপন মনের মত করে বদলিয়ে অন্যকে সৃষ্টি করে।
আরও পড়ুনঃ চোখের বালি পিডিএফ রিভিউ | বাংলা সাহিত্যের মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস
মানুষের মৃত্যুর পরে তার জীবনী লেখা হয় তার কারণ, একদিকে সংসারে সে মরে, আর –এক দিকে মানুষের মনে সে নিবিড় করে বেঁচে ওঠে।
মানুষের কোনো কথাটাই সোজা নয়। আমরা ডিক্শনারিতে যে কথার এক মানে বেঁধে দেই, মানব-জীবনের মধ্যে মানেটা সাতখানা হয়ে যায়; সমুদ্রের কাছে এসে গঙ্গার মতো!
বিবাহের হাজারখানা মানে। মানুষের সঙ্গে মিশে তার মানে হয়, মানুষকে বাদ দিয়ে তার মানে বের করতে গেলেই ধাঁ ধাঁ লাগে।
যে পক্ষের দখলে শিকল আছে সে শিকল দিয়েই পাখিকে বাঁধে, অর্থাৎ জোর দিয়ে। শিকল নেই যার সে বাঁধে আফিম খাইয়ে, অর্থাৎ মায়া দিয়ে। শিকলওয়ালা বাঁধে বটে কিন্তু ভোলায় না, আফিমওয়ালী বাঁধেও বটে ভোলাও। মেয়েদের কৌটো আফিমে ভরা, প্রকৃতি – শয়তানী তার জোগান দেয়।
পৃথিবীতে হয়তো দেখবার যোগ্য লোক পাওয়া যায়, তাকে দেখবার যোগ্য জায়গাটি পাওয়া যায় না।
আরও পড়ুনঃ যে বইগুলো জীবনে একবার হলেও পড়া উচিত | ৫০০ বইয়ের তালিকা