Skip to content
Home » মাইকেল মধুসূদন দত্ত জীবনচরিত | বাংলা সাহিত্যে অবদান | জীবনী

মাইকেল মধুসূদন দত্ত জীবনচরিত | বাংলা সাহিত্যে অবদান | জীবনী

বাংলা নাটকে সাহিত্যে মাইকেল মধুসূদন দত্ত জীবনচরিত অবদান

যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।

১৮৪৩ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। কলকাতার ভদ্র সমাজে ঢিঁ-ঢিঁ পড়ে গেছে।
সাগরদাঁড়ির জমিদার রাজনারায়ণ দত্তের একমাত্র পুত্র মধু পালিয়ে আশ্রয় নিয়েছে ফোর্ট উইলিয়ামে। পুরো নাম মধুসূদন দত্ত। ছেলেটি দারুণ মেধাবী, হিন্দু কলেজের বৃত্তিপ্রাপ্ত ছাত্র, বন্ধুরা বলে বইপোকা। শেক্সপিয়ার নখদর্পনে, মুখে মুখে কবিতা বানাতে পারে, ঠোঁটের আগায় ইংরেজি বুলি লেগেই আছে। বাংলা ও বাঙ্গালীদের প্রতি তার ভীষণ রাগ, নামীদামী পত্রিকায় ইংরেজি কবিতা লিখে। জমিদার-তনয়টি খামখেয়ালীও খুব, এক জামা বেশি সময় গায়ে রাখে না, খোলামকুচির মতো টাকা ওড়ায়, পথেঘাটে সুরাপান করে পরে থাকে।

এবার সে সংকল্প নিয়েছে খ্রিষ্টান হবে, বিলেত যাবে। বাবার পছন্দসই বালিকাবধূকে বরণ করবে না। বিয়ে ভেঙ্গে গেল। রাগে অপমানে রাজনারায়ণ দত্ত লাঠিয়াল বাহিনী ঠিক করলেন। ওদিকে ওল্ড মিশন গির্জার সামনে কর্তৃপক্ষ নিযুক্ত করলো সশস্ত্র সৈনিক। মা জাহ্নবী দেবীর অশ্রু, প্রিয় বন্ধুর গৌরদাসের আকুতি উপেক্ষা করে ১৯ বছরের তরুণ মহাবিপ্লব ঘটালেন। চার্চের বিশপ নব-ধর্মের সাথে তাকে নব-নাম দিলেন “মাইকেল“, তিনি হয়ে গেলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত


১৮২৪ সালের ২৫ জানুয়ারি যশোরের সাগরদাঁড়ি গ্রামে মধুসূদনের জন্ম। পিতার নাম রাজনারায়ণ দত্ত এবং মাতা জাহ্নবী দেবী। মধুসূদনের বাবা রাজনারায়ণ দত্ত ছিলেন একজন স্বনামধন্য উকিল, তাই তাকে বেশির ভাগ সময়ই ব্যস্ত থাকতে হতো। পিতার ব্যস্ততার কারণে মা জাহ্নবী দেবীর কাছেই লেখাপড়ার হাতেখড়ি হয়েছিলো ছোট্ট মধুসূদনের। সাগরদাঁড়িতেই ছিলো তার প্রথম পাঠশালা। রামায়ণ, মহাভারত, পুরাণ প্রভৃতির সঙ্গে পরিচিত করে দিয়েছিলেন জাহ্নবী দেবী।

Download Now

বাংলার পাশাপাশি আরবি ও ফারসি ভাষায় জ্ঞানার্জনের জন্য গ্রামেই মধুসূদনকে ফার্সি শেখানোর ব্যবস্থা করা হয়েছিলো। মধুসূদন খুব দ্রুতই এই ভাষা শিখে নেন। সেই সঙ্গে গজলও শেখেন। পরে হিন্দু কলেজের বন্ধুদের তিনি গজল শোনাতেন।

শেখপুরা মসজিদ ( ১৮শ শতাব্দী ) কেশবপুর, যশোর , কবি মধূসদন দত্ত বাল্যকালে এখানে পার্সিয়ান ভাষা শিখতেন ।

আরও পড়ুনঃ বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা | বৈজ্ঞানিক গবেষণালব্ধ কিছু উপকারিতা

সাত বছর বয়সে মধুসূদন কলকাতায় আসেন এবং খিদিরপুর স্কুলে কিছুদিন পড়াশোনা করেন। তারপর ১৮৩৩ সালে তিনি হিন্দু কলেজে ভর্তি হন এবং হিন্দু কলেজে অধ্যয়নকালেই মধুসূদনের প্রতিভার বিকাশ ঘটে। অচিরেই তিনি অধ্যক্ষ ডি এল রিচার্ডসনের প্রিয় ছাত্র হয়ে উঠেন।

Download Now

হিন্দু কলেজে বাংলা পড়াতেন রামতনু লাহিড়ী। তাঁর পটলডাঙ্গার বাড়িতে মধুসূদন সহ অন্য ছাত্ররা নিয়মিত যাতায়াত করতেন। এই আড্ডাতেই মধুসূদন অনর্গল মিল্টন ও শেক্সপিয়র থেকে আবৃত্তি করতেন। তার অন্যান্য সহপাঠীরা ছিলেনঃ ভূদেব মুখোপাধ্যায়, রাজনারায়ণ বসু, গৌরদাস বসাক, প্যারীচরণ সরকার প্রমুখ যারা ঊনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ।

খ্রিস্টান ধর্ম গ্রহণ করার আগে হিন্দু কলেজের শেষ পরীক্ষায় মধুসূদন পেয়েছিলেন পঞ্চাশের মধ্যে তিরিশ। তিনি অষ্টম হয়েছিলেন। প্রথম হয়েছিলেন গোবিন্দ দত্ত, তিনি পেয়েছিলেন উনপঞ্চাশ। দ্বিতীয় হয়েছিলেন প্যারীচরণ সরকার। পেয়েছিলেন সাতচল্লিশ।

আরও পড়ুনঃ বিরাজ বৌ PDF রিভিউ | শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় উপন্যাস

মাইকেল মধুসূদন দত্তের পরীক্ষার খাতা

১৮৪৩ সালের সেই ৯ ফেব্রুয়ারির পর হিন্দু কলেজের দুয়ার বন্ধ হয়ে গেল, সেখানে বিধর্মীর স্থান নেই। খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণ করায় সমাজ তো ত্যাগ করেছেই, বাবাও সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত এবং ত্যাজ্য করবেন বলে ঘোষণা দিলেন। শুধু নাড়ীর টানে মা এখনো ছেলের জন্য অর্থসাহায্য পাঠান। মধুসূদন ভর্তি হলেন বিশপ্স আবাসিক কলেজে।

Download Now

মোহভঙ্গ হলো মধুর। যে জাতিভেদের জন্য হিন্দুধর্ম ছেড়ে খ্রিস্টান হওয়া, তাতেও তো চর্চা হচ্ছে বৈষম্যের বিষ! হিন্দু ছাত্রদের কেন অন্যরকম পোষাক, কেন তাদের খাদ্য দিতে কার্পণ্য? বিপ্লবী মধু প্রতিদিনই একটা গন্ডগোল পাকিয়ে তোলেন। কিন্তু দারুণ মেধাবী, ভাষাশিক্ষায় সবার চাইতে উজ্জ্বল এই ছাত্রকে ‘রাস্টিকেট’ করতেও সম্মত হলো না কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুনঃ দীনবন্ধু মিত্রের নীলদর্পণ নাটক PDF রিভিউ | প্রেক্ষাপট | পটভূমি | আলোচনা

একসময় আত্মাভিমানে আহত রাজনারায়ণ অর্থ সরবরাহ বন্ধ করে দিলেন। চরম দুর্দিনে মধুর মনে পড়লো তাঁর মা’কে – জন্মদাত্রী মা জাহ্নবী ও মাতৃভূমি যশোরের সাগরদাঁড়িকে।

ছুটে গেলেন শৈশবের কপোতাক্ষ নদের তীরে। এই সাগরদাঁড়িতে এক শীতের দিনে জন্ম হয়েছিল তাঁর, জন্মসংবাদ পেয়ে জমিদার পিতা প্রজাদের উপর থেকে কর হ্রাস করেছিলেন, চলেছিল ভোজউৎসব। আজ সেই ভূমিতে তিনি অপাংক্তেয়। জাত হারানো মধুকে মা জাহ্নবী দেবীর সাথে দেখা করতে দিলো না পাড়াপড়শি। হিন্দুসমাজের প্রতি আরেকবার প্রবল বিতৃষ্ণা নিয়ে গ্রাম ছাড়লেন মধুসূদন।

Download Now
সুদুর ফ্রান্সের ভার্সাই নগরীতে বসে
তার লিখনীতে এই নদের স্মৃতি ভেসে উঠেছিল।

আরও পড়ুনঃ আরণ্যক PDF | উপন্যাসের বিষয়বস্তু | রিভিউ | বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়

বিলেত যাওয়া হলো না আর। ১৯৪৭ সালে ভাগ্যান্বেষনে এলেন মাদ্রাজে। স্কুলে ইংরেজি পড়ান, আর ‘মাদ্রাজ সার্কুলেটর’ পত্রিকায় “টিমোথী পেনপোয়েম” ছদ্মনামে কবিতা লেখেন। মা মারা গেলেন, খবর পেলেন না। যখন জানলেন, তখন অনেক দেরী হয়ে গেছে। ১৮৪৯ সালে ‘ক্যাপটিভ লেডি’ নামে বই প্রকাশ পেল তাঁর, সমাদৃত হলো না। হতাশ মধুকে শিক্ষা সচিব বেথুন সাহেব ও বন্ধু গৌর উপদেশ দিলেন মাতৃভাষায় লেখার জন্য।

মাদ্রাজে ‘হিন্দু ক্রোনিকল’, ‘স্পেকটেটর’ পত্রিকায় সম্পাদনা করেছেন। মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাইস্কুলে পড়িয়েছেন। রূপসী রেবেকা ম্যাকটাভিসের সাথে চরম অসুখী এক দাম্পত্যজীবন কাটালেন সাত বছর। ১৮৫৫ সালে পিতার মৃত্যসংবাদে পেয়ে উদভ্রান্ত মধু কলকাতায় ফিরলেন।

রেবেকার সাথে মাইকেল মধুসূদন দত্তের বিয়ের দলিল

আরও পড়ুনঃ আবু ইসহাকের গল্প : ডুবুরির কৌতুকপূর্ণ চোখ | ১ | আহমাদ মোস্তফা কামাল

বন্ধু গৌরদাস আশ্রয় দিলেন। বন্ধুদের সহায়তায় পুলিশ অফিসে কেরানীর চল্লিশ টাকা বেতনের চাকরী জুটলো, জমিদারির কিয়দংশ উদ্ধার হলো। পরিচয় হলো ফরাসী এমিলিয়া হেনরিয়েটার সাথে। শুরু হলো লোয়ার চিৎপুরের সংসার। বেহিসেবী মধু বেতনের সব টাকাই বই আর মদের পিছনে উড়িয়ে দিতেন।

সংসার চলে না। গৌরের হাজার অনুরোধের পর ‘রত্নবলী’ নাটকের ইংরেজি অনুবাদ করলেন সম্মানীর বিনিময়ে। মহাভারতের শর্মিষ্ঠা দেবযানী আখ্যান নিয়ে ‘শর্মিষ্ঠা’ নাটক লিখে বসলেন একদিন। বাংলা সাহিত্যে ও হিন্দু সমাজে আরো একবার ঝড় তুললেন মধুসূদন দত্ত। ‘একেই কি বলে সভ্যতা’, ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ে রোঁ’, পদ্মাবতী – একের পর এক নাটক লিখে চললেন।

Download Now

বন্ধুদের আড্ডায় একদিন বলে বসলেন মধুকবি, বাংলাভাষায় একমাত্র অমিত্রাক্ষর ছন্দেই কাব্যরচনা সম্ভব, এবং সে একমাত্র একজনই পারবে। লিখলেন ‘তিলোত্তমা সম্ভব কাব্য’।

১৮৬১ সালের জন্মমাসে প্রকাশ পেল ‘মেঘনাদবধ কাব্য‘। মাইকেল মধুসূদন দত্ত নিজের নামটি স্বর্ণাক্ষরে লিখে নিলেন বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে। সে বছরই মার্চ মাসে এক রাতের মধ্যে ইংরেজিতে অনুবাদ করলেন ‘নীলদর্পন‘ নাটক।

আরও পড়ুনঃ ভোকাবুলারি শেখার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী ১০টি উপায়

সংসারে সচ্ছলতা এলো। কষ্টের দিনে সঙ্গী হয়েছিলেন হেনরিয়েটা, সুখটাও তাঁর প্রাপ্য। ১৮৬২ সালে সাগরদাঁড়িতে আবারও গেলেন দুজন। সাথে শিশুপুত্র মিল্টন ও কন্যা শর্মিষ্ঠা। যে সাগরদাঁড়ি একদিন তাকে ফিরিয়ে দিয়েছিল, সেই গ্রামবাসীরাই আজ দলে দলে দেখতে এলো সাহেববেশী মধুকে।

Download Now
মাইকেল মধুসূদন দত্তের স্ত্রী হেনরিয়েটা

খেয়ালী মধুর মাথায় ভাগ্যদেবী আবারও খেয়াল চাপালেন, বিলেত গিয়ে ব্যারিস্টারি পড়বেন। ততোদিনে লিখেছেন ‘ব্রজাঙ্গনা কাব্য’, ‘আত্মবিলাপ’, ‘কৃষ্ণকুমারী’ নাটক, ‘বঙ্গভূমির প্রতি’ কবিতা। সরলবিশ্বাসে পৈত্রিক সম্পত্তি ও গৃহের বিলিব্যবস্থা করলেন মহাদেব চট্টোপাধ্যায় ও দিগম্বর মিত্রের সাথে, তারা বিলেতে পড়ার খরচ পাঠাবেন।

৩৮ বছর বয়স্ক মধু ইংল্যান্ড যাত্রা করলেন এবং স্ত্রী-পরিবার নিয়ে চরম অর্থসংকটে পড়লেন। মহাদেব ও দিগম্বর প্রতিশ্রুতি রাখেননি। লন্ডন থেকে প্যারিস, প্যারিস থেকে ভার্সেই। ধারদেনায় দিন কাটছে। মধুর শরীর ভালো নয়, কলম ধরতে পারেন না। তবু কবিতা বলে চলেছেন, হেনরিয়েটা লিখে দিচ্ছেন। লিখলেন চতুর্দশপদী কবিতা ‘বঙ্গভাষা’।

আরও পড়ুনঃ আবু ইসহাকের গল্প : ডুবুরির কৌতুকপূর্ণ চোখ | ৩ | আহমাদ মোস্তফা কামাল

ভার্সাইলস, ফ্রান্স।
মাইকেল মধুসূদন দত্তের বাসস্থান।

অর্থাভাবে মধু চিঠি লেখেন ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগরের কাছে। তাঁর বদান্যতায় মধু ব্যারিস্টারি পাশ করে স্ত্রীকে ফ্রান্সে রেখে দেশে ফিরেন। হেনরিয়েটার সাথে বিবাহ-বহির্ভূত সম্পর্ক বাধা হয়ে দাঁড়ায়। আবারো এগিয়ে এলেন বিদ্যাসাগর, যোগাড় হলো চারিত্রিক সনদপত্র। প্র্যাকটিস তো শুরু করলেন, কিন্তু আয়ের চেয়ে ব্যয় বেশী। পুনরায় হাত পাতলেন বিদ্যাসাগরের কাছে। এ দফা বিশ হাজার টাকায় নিজের সকল সম্পত্তি বিক্রি করে বিদ্যাসাগরের দেনা মেটালেন। যে সম্পত্তি ক্রয় করলো বিশ্বাসঘাতক মহাদেব।

‘শনিবারের চিঠি’র একটি সংখ্যায় ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর এবং মাইকেল মধুসূদন দত্তকে নিয়ে একটি কার্টুন প্রকাশিত হয়েছিল। কার্টুনটির বিষয় ছিল, “অন্তর এবং বাহির যদি এক হইত।”
(দুজনের চিরাচরিত পোশাক বদলাবদলি করে দেয়া হয়েছে। বোঝানো হচ্ছে- বিদ্যাসাগরের অন্তর পাশ্চাত্য সভ্যতায় শিক্ষিত, তাই তার কোটপ্যান্ট; আর মধুসূদন ফিরে এসেছেন বাংলা ভাষায়, তাই তার গায়ে নামাবলী।)

আরও পড়ুনঃ নকশী কাঁথার মাঠ কাব্যগ্রন্থের রুপাই চরিত্রের বাস্তব পরিচয় ও জীবনী

হেনরিয়েটা দেশে ফেরায় রাজকীয় বাড়ি ভাড়া করলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত । ঋণের দায়ে আর পাওনাদারদের টিপন্নীতে ব্যারিস্টারী ছাড়লেন। একের পর এক চাকুরি বদল করলেন। এরইমধ্যে ১৮৭১ সনে ‘হেকটরবধ কাব্য‘ প্রকাশ পেল।

Download Now

দীর্ঘদিনের অত্যাচারে ক্রমশঃ স্বাস্থ্য আরো ভেঙ্গে এলো। হেনরিয়েটারও শরীর ভালো নয়। বন্ধুরা আর চৌকাঠ মাড়ায় না, বিদ্যাসাগরও এবার ফিরিয়ে দিলেন। কেবল পাওনাদারেরাই দু’বেলা খোঁজ করে যায়, তাও তো টাকার জন্য। অসুস্থতা, অর্থকষ্ট আর ঋণের বোঝা জীবন দুর্বিষহ করে তুললো।

১৮৭৩ সালে জুন মাসের ২৬ তারিখ চোখ বুঁজলেন হেনরিয়েটা, চিরদিনের সাথীর সঙ্গ ছুটে গেল। মধুসূদনও আর অপেক্ষা করলেন না। তিনদিন পরেই পাড়ি জমালেন তাঁর প্রিয়তমার কাছে। একাকী, অসহায়, কপর্দকহীন! বয়স তখন মাত্র ৪৯ বছর।

মাইকেল মধুসূদন দত্তের সমাধি

আরও পড়ুনঃ আমার জীবন চার্লি চ্যাপলিন জীবনী PDF | Charlie Chaplin Bangla

উনিশ শতকের বাঙালি নবজাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ মাইকেল মধুসূদন দত্ত তাঁর অসাধারণ প্রতিভা দিয়ে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের যে উৎকর্ষ সাধন করেন, এরফলেই তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাসে অমর হয়ে আছেন। বাংলা সাহিত্যকে প্রসিদ্ধ করতে আরো যা কিছু দিতে পারতেন, তার অনেকটাই যে বাকী রয়ে গেল শুধু তার বৈচিত্রময় জীবনের কারণে। বাংলার এই মহান কবির শেষজীবনটা ঋণের দায়, অর্থাভাব, অসুস্থতা, চিকিৎসাহীনতা ইত্যাদি কারণে হয়ে উঠেছিল দুর্বিষহ।

Download Now

মহাকবি জীবনের অন্তিম পর্যায়ে জন্মভূমির প্রতি তার সুগভীর ভালোবাসার চিহ্ন রেখে গেছেন অবিস্মরণীয় পংক্তিমালায়। তার সমাধিস্থলে নিচের কবিতাটি লেখা রয়েছে :

“দাঁড়াও পথিকবর, জন্ম যদি তব
বঙ্গে! তিষ্ঠ ক্ষণকাল! এ সমাধি স্থলে
(জননীর কোলে শিশু লভয়ে যেমতি
বিরাম) মহীর পদে মহা নিদ্রাবৃত
দত্তকুলোদ্ভব কবি শ্রীমধুসূদন!
যশোরে সাগরদাঁড়ি কপোতাক্ষ-তীরে
জন্মভূমি, জন্মদাতা দত্ত মহামতি
রাজনারায়ণ নামে, জননী জাহ্নবী”

Tags:
x
error: Content is protected !!