যেকোন বইয়ের ফ্রি পিডিএফ পেতে অনুগ্রহ করে আমাদের PDF Download সেকশনটি ভিজিট করুন। প্রতিনিয়ত নতুন নতুন বইয়ে সাজানো হচ্ছে আমাদের এই অনলাইন পাঠশালা। সাথে থাকার জন্য ধন্যবাদ।
জাতীয় পরিচয়পত্রে অথবা সার্টিফিকেটে নামের ভুল কিংবা বাবা-মায়ের নামে ভুল না থাকলে আপনি এলিয়েন, নিশ্চয়ই আপনি অন্য গ্রহের বাসিন্দা। বঙ্গদেশে থেকে এই সমস্যায় পড়বেন না সেটা হতেই পারে না। যাইহোক, আপনি পার পেয়ে গেলেও আপনার আশেপাশের অনেকের মাঝেই পাবেন যার নাম “সাদিয়া বিলকিস খান” থেকে “চা দিয়া বিস্কিট খান” হয়ে গেছে। উনি এখন কোথায় যাবেন? দালালের কাছে গেলে বলে লাখ টাকা লাগবে তাকে আবার সাদিয়া বানাইতে। কিন্তু আসলেই কি তাই? এই বিষয়ে সঠিক তথ্য না জানার কারণে অনেকে বিভ্রান্তিতে থাকে। আমি আমার অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান থেকে পুরো বিষয়টা ক্লিয়ার করছি। আশা করছি ঝামেলা ছাড়াই সমস্যাটির সমাধান নিজে নিজে করতে পারবেন।
আমি এমন কিছু মানুষকে দেখেছি যাদের নিজের কাগজপত্রে সবকিছু সঠিকই ছিলো কিন্তু তাঁদের বাবা-মায়ের এনআইডির সাথে নামের মিল করতে গিয়ে নিজের কাগজপত্রে গরমিল করে ফেলেছে। এইটা কোনভাবেই করা যাবেনা। এইখানে প্রথম রুল হচ্ছে আপনার (খেয়াল করুন, আপনার নিজের কথা বলতেছি) সকল কাগজপত্রে নাম, পিতা-মাতার নাম, জন্ম তারিখসহ সবকিছুই সেইম থাকতে হবে। আবার বলছি, আপনার নিজের সকল কাগজপত্রে সবকিছু একইরকম রাখবেন, বাবা-মায়ের আইডিতে কি আছে সেটা পরের বিষয়। মাথা থেকে ওইটা ঝেড়ে ফেলে দিন। মনে করেন বাবা-মায়ের আইডি দরকার নাই।
এখন, আপনি জাস্ট কমনসেন্স দিয়ে চিন্তা করুন, আপনার নাম একাডেমিক সার্টিফিকেটে “লাল মিয়া”। আপনার জন্ম সনদে “মোঃ লাল মিয়া”। আবার এনআইডিতে “মোঃ বাল মিয়া”। এরকমটা হলে কোনটা আসলেই আপনি, কিভাবে বুঝবে? সুতরাং এতটুকু বুঝতে পারলাম যে, নিজের কাগজপত্রে ভিন্ন ভিন্ন তথ্য গ্রহণযোগ্য নয়। অর্থাৎ নিজের সকল কাগজপত্রে সকল তথ্য একইরকম হতে হবে।
আরও পড়ুনঃ হাট্টিমাটিম টিম ছড়াটির লেখক কে? সম্পূর্ণ কবিতার আসল রচয়িতা কে?
এবার আসেন, আপনার নাম সংশোধন করি। ধরেন, আপনার সার্টিফিকেটে যা আসছে সেটাই আপনার সঠিক নাম অর্থাৎ আপনার সঠিক নাম “লাল মিয়া”। যেহেতু নিজের সকল কাগজপত্রে সকল তথ্য একইরকম রাখতে হবে তাই আমরা সকল জায়গায় “লাল মিয়া” দিয়ে সংশোধন করবো। আর এক্ষেত্রে, আপনার কাগজপত্রের যেকোন একটাকে সঠিক হিসেবে ধরে হিসেবে ধরে, সেইটা অনুযায়ী বাকিগুলো সংশোধন করে নিতে হবে। যেহেতু আমাদের সার্টিফিকেটে “লাল মিয়া” আছে তাই এখন সবজায়গায় শুধু “লাল মিয়া” রাখতে চাচ্ছি। তাহলে জন্ম সনদ থেকে “মোঃ” কেটে দিবো এবং এনআইডি থেকে “মোঃ বাল” কেটে “লাল” করে দিবো। আর সেটার প্রমাণ হিসেবে সার্টিফিকেটের ফটোকপি জমা দিলেই হবে যেটা প্রমাণ করবে আপনি আসলেই “লাল মিয়া“।
মানে আপনার কাগজপত্রগুলো থেকে একটাকে সঠিক ধরে সেইটা অনুজায়ী বাকী সবকিছু সংশোধন করতে পারবেন। সাধারণত একাডেমিক সার্টিফিকেটে নামের ভুল বানান সংশোধন একটু জটিল। কিন্তু এনআইডি এবং জন্ম সনদ সহজেই সংশোধন করা যায়। তাই চেষ্টা করবেন একাডেমিক সার্টিফিকেটে যা আসে সেটাকেই সঠিক ধরে বাকীগুলো একইরকম করতে। মোটকথা আমাদেরকে যেকোনভাবেই আমাদের নিজের সকল কাগজপত্রের সকল তথ্য একইরকম করতে হবে।
এখন মনে করেন, একজনের নাম “স্বপ্ন ঘোষ”। এবং উনার নাম ভুল করে সকল জায়গায় (খেয়াল করুন, উনার সকল কাগজপত্রে) চলে আসছে “স্বপ্ন দোষ”। তাহলে কিন্তু উনার নাম ভুল থাকা স্বত্বেও উনি তেমন কোন ঝামেলায় পরবেন না। কারণ উনার সবকিছুতে একইরকম তথ্য আছে। যদিও সেটি ভুল কিন্তু সকল জায়গায় একইরকম থাকার কারণে এই ভুলটাই সঠিক হিসেবে কাজ করতেছে। এখন উনি যদি চায় এটি সংশোধন করতে তাহলে কিন্তু আবার সকল কাগজপত্রেই সংশোধন করতে হবে, কেননা ঐ যে সকলকিছুতে একইরকম তথ্য থাকতে হবে। তাই উনি চাইলে এই ভুল নামটাকেই সঠিক হিসেবে মেনে নিতে পারে এবং এতে পরবর্তীতে উনার কোন সমস্যাও হবেনা। আপনাদেরও যদি এমন কোন ভুল থাকে এবং সেটা সকল কাগজেই আছে, তাহলে সেটিকেই সঠিক ধরে নিতে পারেন এবং এর কারণে কোন সমস্যায় পরবেন না, কারণ আপনার নিজের সকল কিছুতে একই তথ্য। কিন্তু চেঞ্জ করতে গেলে আবার সবকিছুতেই চেঞ্জ করতে হবে, কেননা উদ্দেশ্য সকল জায়গায় একই তথ্য রাখা। এতোটুকু তো ক্লিয়ার নাকি? ক্লিয়ার না হলে আবার পড়েন। আশা করি বুঝে যাবেন।
আরও পড়ুনঃ পিডিএফ বলতে কি বুঝায় ? এর কাজ কি ? বাংলা পিডিএফ বই ফ্রি ডাউনলোড
এখন আসা যাক বাবা-মায়ের এনআইডি কার্ডের তথ্য কখন প্রয়োজন পড়বে?
সাধারণত বাবা-মায়ের এনআইডি তখনি প্রয়োজন পড়বে যদি তাঁদের সাথে আপনার কোন সম্পর্ক দেখাতে হয়। যেমনঃ আপনি যদি উচ্চশিক্ষা নিতে বাহিরে যেতে চান এবং বাবা/মায়ের ব্যাঙ্ক একাউন্ট দেখাতে চান তখন সেই নামটা বড় একটা ফ্যাক্টর হিসেবে কাজ করবে। অথবা আপনার কোন কোটা আছে এবং চাকরি বা কোথাও ভর্তির ক্ষেত্রে কোটা এপ্লাই করতে চান তখন নিশ্চয়ই কর্তৃপক্ষ যাচাই করে দেখবে উনি আসলেই আপনার বাবা কি না। তখন যদি আপনার বাবা-মায়ের এনআইডির সাথে আপনার নিজের কাগজপত্রে দেয়া আপনার বাবা-মায়ের নামের মিল না থাকে তাহলে তো প্রমাণ হবেনা যে উনি আসলেই আপনার বাবা/মা। তাহলে এতোটুকু বুঝতে পারলাম যেসব ক্ষেত্রে রিলেশান চেক করে দেখে তখনি কেবল বাবা-মায়ের এনআইডির প্রয়োজন হয়। এছাড়া কোথাও না।
সেক্ষেত্রে আপনি আপনার বাবা/ মায়ের আইডি সংশোধন করে নিতে পারেন। অথবা একটা এফিডেভিটও করে নিতে পারেন যেখানে লিখা থাকবে দুইটা নামের ব্যক্তি একজনই। কেননা, যদি আপনি নিজের আইডি সংশোধন করেন তাহলে কিন্তু আপনার সকল কাগজপত্রেই সংশোধন করতে হবে। আবার বাবা-মায়ের আইডি সংশোধন করতে গেলেও বিবেচনায় রাখতে হবে অন্য ভাই-বোনের কাগজপত্রের সাথে তথ্যের অমিল হচ্ছে কি না। মানে বিষয়টা অনেকগুলো রিলেশানের সাথে জড়িত তো তাই একটু জটিল প্রক্রিয়া।
আরও পড়ুনঃ মাইকেল মধুসূদন দত্ত জীবনচরিত | বাংলা সাহিত্যে অবদান | জীবনী
তাই কেউ যদি বাহিরে পড়তে যেতে চান অথবা বাবা-মা কে সহ বাহিরে বসবাস করতে চান, মানে বাবা-মায়ের সাথে আপনার রিলেশান দেখানো প্রয়োজন পরবে এমন ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের আইডির সাথে আপনার তথ্যের ক্রস ম্যাচ করা হবে, তাছাড়া অন্য কোথাও বাবা-মায়ের আইডির তেমন প্রয়োজন হয়না। আবার বলছি যেসকল জায়গায় বাবা-মায়ের সাথে রিলেশান দেখাতে হবে সেসব ক্ষেত্রে বাবা-মায়ের নাম গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো আপনার নিজের সবকিছু একইরকম রাখা। কেননা বাবা-মায়ের সাথে রিলেশান সবক্ষেত্রে দেখাতে হয়না, কিন্তু আপনার সকল কাগজপত্রে একইরকম তথ্য আছে কি না এটা সবজায়গায় যাচাই করা হয়। তাই বাবা-মায়ের আইডির চাইতে বেশি গুরুত্ব দিবেন নিজের সকল কাগজপত্রে সকল তথ্য একইরকম রাখতে। আশা করি বুঝতে পেরেছেন।
সংশোধনে করণীয়…
এবার আসা যাক সংশোধনের প্রয়োজন হলে কিভাবে এবং কি কি ডকুমেন্টের মাধ্যমে তথ্য সংশোধন করতে পারবেন। বর্তমানে এনআইডি সংশোধন অনেক সহজ। আপনি ঘরে বসে অনলাইনে আবেদন করেই ১মাসের মধ্যেই নিজের তথ্য নিজেই সংশোধন করতে পারবেন। তবে আপনি ঠিকানা যদি ভিন্ন কোন জেলায় পরিবর্তন করতে চান সেক্ষেত্রে অনলাইনে সেটি সম্ভব হবেনা।
নির্বাচন কমিশনের সাইটে গিয়ে আপনার এন আই ডি তথ্য দিয়ে প্রথমে রেজিস্ট্রেশন করবেন এবং পরে স্মার্টফোনের মাধ্যমে ফেইস ভেরিফিকেশান কমপ্লিট করলে আপনাকে ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিতে বলবে। তারপর সেই ইউজারনেম এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে লগিন করে আপনি আপনার সকল কাজ সেই ওয়েবসাইট থেকেই করতে পারবেন। আরও বিস্তারিত জানতে ইউটিউবে অনেক ভিডিও পাবেন সেগুলো দেখতে পারেন। আমার কাজ ছিলো পুরো প্রক্রিয়াটা সম্পর্কে ধারণা ক্লিয়ার করা। তারপরও যদি কোন বিষয় বুঝতে না পারেন প্রথম থেকে আবার পড়েন। এর চেয়ে সহজভাবে লিখে বুঝানো সম্ভব না।
এখন জানা দরকার তথ্য পরিবর্তনে কি কি ডকুমেন্ট লাগবে?
অনলাইনে আপনার তথ্য পরিবর্তনে প্রতিটি ডকুমেন্টের স্ক্যান কপি অথবা স্পষ্ট ছবি তুলে আপলোড করতে হয়। আমরা আগে আলোচনা করেছি সকল জায়গায় একই তথ্য থাকতে হবে। এখন মনে করেন এনআইডি-তে নাম আসছে “বাল মিয়া” কিন্তু বাকি সকল জায়গায় “লাল মিয়া”। তাই সংশোধনের আবেদনে আপনার যেই সারটিফিকেটে/ডকুমেন্টে সঠিক তথ্যটা আছে সেটা আপলোড দিলেই হবে। সেটি হতে পারে জন্ম-নিবন্ধন/এসএসএসি/এইচএসসি সার্টিফিকেট। মানে একটা সঠিক ডকুমেন্টকে প্রমাণ হিসেবে দেখিয়ে ভুল তথ্যটি কারেক্ট করতে হবে। এইটাই মূল বিষয়।
আরও পড়ুনঃ বই পড়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা | বৈজ্ঞানিক গবেষণালব্ধ কিছু উপকারিতা
আরেকটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়
এখন মনে করেন আপনার বাবা/মায়ের নাম ভুল আসছে। তাহলেও কিন্তু আপনার নিজের জন্ম-নিবন্ধন/এসএসএসি/এইচএসসি সার্টিফিকেটই আপলোড করতে হবে। তারা দেখবে আপনার নিজের অন্য সব কাগজপত্রে আপনার বাবা-মায়ের নাম কিভাবে দেয়া এবং সেটা দেখেই সংশোধন করবে। এইখানে কিন্তু বাবা-মায়ের আইডি আপলোড করলে হবেনা, কখনোই আপনার বাবা-মায়ের আইডি কার্ড দেখে আপনার আইডি সংশোধন করবেনা। কেউ যদি আপনার বাবা-মায়ের আইডি দেখে সংশোধন করতে চায় তাহলে উনাকে বুঝাবেন যে তখন আপনার অন্যসব কাগজপত্রে আবার নামের অমিল হয়ে যাবে। একটু কমনসেন্স দিয়ে চিন্তা করে দেখেন। বাবা-মায়ের আইডি দেখে সংশোধন করলে যদি আবার অন্য কাগজপরের সাথে না মিলে তাহলে ঝামেলা বাড়বে না কমবে? লাভ হবে কিছু? তাই সবসময় নিজেরটাকে বেশি গুরুত্ব দিবেন। আবারও সেই একই কথা বাবা-মায়ের আইডিতে কি আছে সেটা সবজায়গায় দেখেনা, কিন্তু আপনার নিজের সকল কাগজপত্রে একইরকম তথ্য আছে কি না এটা সবজায়গায় যাচাই করা হয় । আশা করছি শুধু এই কথাটা মনে রাখবেন এবং এইটা অনুসারেই কাজ করবেন। ধন্যবাদ
আরও পড়ুনঃ ভোকাবুলারি শেখার সবচেয়ে সহজ ও কার্যকরী ১০টি উপায়